Friday, September 27, 2019

কোরআনের যে দশটি সুরা আপনাকে বিপদ থেকে বাচাবে

কোরআনের যে দশটি সূরা আপনাকে দশটি বিপদ থেকে বাঁচাবে


আল্লাহ মানুষকে বিভিন্ন সময় নানা বিপদে ফেলে পরীক্ষা করে থাকে। শুধু ইহকালে নয় আল্লাহ মানুষকে পরকালেও পাপের শাস্তি দেবেন। ইহকালের বিপদ কিংবা পরকালের শাস্তির হাত থেকে তৎক্ষণাত রক্ষা পাওয়ার উপায় বলে দেয়া আছে আল কোরআনে। আল কোরআনের এমন দশটি সূরা আছে যেগুলো বিপদে পড়ার পর পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে আপনি রক্ষা পাবেন। সূরা গুলো নিম্নরূপ-

(১) সূরা ফতিহা আল্লাহর গজব হতে রক্ষা করবে।

(২) সূরা ইয়াসীন কিয়ামতের দিন পিপার্সাত হওয়া থেকে রক্ষা করবে।

(৩) সূরা দুখান কিয়ামতের দিনের ভয়াল অবস্থা হতে রক্ষা করবে।

(৪) সূরা ওয়াকি’আ দরিদ্রতা হতে রক্ষা করবে।

(৫) সূরা মূলক কবরের আযাব হতে রক্ষা করবে।

(৬) সূরা কাওসার শত্রুর অনিষ্ট হতে রক্ষা করবে।

(৭) সূরা কাফিরুন মৃত্যুর সময় কুফরী হতে রক্ষা করবে।

(৮) সূরা ইখলাস মুনাফিকী হতে রক্ষা করবে।

(৯) সূরা ফালাক হিংসুকের হিংসার হতে রক্ষা করবে।

(১০) সূরা নাস যাবতীয় ওয়াসাওয়াসা হতে রক্ষা করবে।

এক আল্লাহর সত্য বানী আল কোরআনই পারে সকল মুসলিমদের রক্ষা করতে। সকলে আমল গুলো করার চেষ্টা করুন, আল্লাহ্‌ আপনাকে রক্ষা করবেন ইনশাল্লাহ্।

Saturday, September 21, 2019

বেকারত্বের গল্প

__হঠাত করেই আমার চাকুরীটা চলে গেল....।।
বেকার হয়ে গেলাম।
ভাবলাম,,,গেছে গেছে,,,কত বন্ধুবান্ধব আমার,,,কতোজন কে চাকুরী দিলাম,,,পেয়েই যাবো আবার।
মেসে শুয়ে বসে সময় কাটছিলো আমার।
# বিকেলে বসে এক এক করে সব বন্ধুকে ১মিনিট করে ফোন দিলাম....আমার জন্য চাকুরী দেখার জন্য।
সবাই আশা দিলো....যে খুজবে পেলে জানাবে....
একটু ভরসা পেলাম...।।
হঠাত করে মায়া ফোন দিলো...ও হ্যা বলাই হয়নি মায়া আমার জিএফ....।।ফেচবু
ক থেকে পরিচয়,,তারপর দেখা,,কথা,,বন্ধ
ুত্ব, প্রেম।
রিসিভ করলাম,,,
_____হ্যালো,,কোথায় তুমি??(মায়া)
_____এই তো মেসে শুয়ে আছি,,কেন??(আমি)
_____তুমি যমুনা ফিউচার পার্কে আসবে,, এখনি আসো....টুট টুট টুট....ফোন কেটে দিলো....
# রেডি হয়ে বাসে উঠে গেলাম যমুনা ফিউচার পার্ক।
মায়া গেটে দাড়ায় আছে,,আমাকে দেখেই...
_____(রেগে)এত লেট করলা কেন?কতক্ষন দাড়ায় আছি,,,(মায়া)
_____রেডী হয়ে আসতে তো সময় লাগে নাকি??(আমি)
_____বাদ দাও,, চলো,,ফুচকা খাবো(মায়া)
_____ওকে........
ফুচকা খেলাম,,ঘুরলাম,,,,আমার ১০০০ টাকা শেষ....মায়া টাকা দিতে চাইছিলো বাট আমি বিল দিতে দেইনি,,,সবসময় দুহাতে খরচ করেছি তো,,,আজ ও দিবে,, নিজের কাছে কেমন লাগছিলো....যদিও মায়া জানেনা যে,,,আজ আমি বেকার,,,চাকুরী চলে গেছে।
ওকে বিদায় দিয়ে বাসায় এসে শুয়ে পরলাম.....
# যতই দিন যাচ্ছিলো টাকার টান পড়তেছিলো....আমার কাছে কিছু টাকাছিলো,,,তা দিয়ে কোন রকমে চলছিলাম....।।
তবে হ্যা,,,মনে পরতো সেই সব দিন....যখন দুহাতে খরচ করতাম...আড্ডা দিতাম....কত বন্ধু বান্ধব.....
অবাক হলাম,,,,যেই আমার ফোনে সারাক্ষন ফোন আসতো,,,বন্ধুদের,,,সেই বন্ধুদের ফোন আসা আস্তে আস্তে কমতে থাকে.....
১ মাস কেটে গেলো,,নিজে থেকে ফোন দিয়ে বন্ধুদের চাকুরীর কথা বললে সবাই আশাই দেয়,,,চাকুরীর খবর কেউ দেয়না.....
হয়তো আমার কপাল খারাপ.....
মায়ার সাথেও জগড়া চলছিলো....
আগে সারাদিন ফোন দিতাম,,প্রায় প্রতি সপ্তাহে ঘুরতে যেতাম...এখন তো আর তা পারিনা....এসব নিয়ে ঝগড়া....
ঝগড়া চলতে চলতে হয়েই গেল ১দিন ব্রেকআপ....তখনো মায়া জানতো না,,,যে এখন আমার চাকুরী নাই....আমি ও জানাইনি.....কেন জানাইনি জানিনা,,,
টেনেটুনে মেসের বিল দিলাম....পকেট হাত সব প্রায় ফাকা....।।
আমি আসলে টাকার কষ্ট,,,টা বুঝিনি,,,কারন বেতন ভালোই পেতাম আর দুহাতে খরচ করতাম......
তবে আজ ভালোই বুঝতে পারতেছি....
যে বন্ধুরা সময় পেলেই আমার কাছে আসতো,,,এখন আমার আশেপাশে তাদের ছায়াও দেখা যায়না......
হায়রে মানুষ.......
কত বহুরূপী........
দেখতে দেখতে দু মাস হয়ে গেল....চাকুরী হচ্ছেনা....মেসে খাওয়ার বিল যে আমি সবার আগে দিতাম,,,,সেই আমি বাকি রাখলাম,,,,যে ম্যানেজ কর সামনের মাসে দিবো...কেউ দিতে চায়নি টাকা,,,কারন আজ আমি বেকার....কিন্তু অভি দিয়েছিলো...আমি চাইনি কিন্তু ও আমার হয়ে দিয়েছিল।অভিকে গত বছর আমি গ্রাম থেকে নিয়ে এসে চাকুরী দিয়েছিলাম....।।
লজ্জা লাগে,,,যে হাত দিয়ে এসেছে সব সময়,,,সে হাত কারো কাছে চাইবে....এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে....।।
একদিন বুয়া আসেনি,,,মেসে রান্না হয়নি,,,সবাইকে হোটেলে খেতে হবে...
সবাই ডিউটিতে গেছে,,,আমার তো কাজ নাই,,,শুয়ে আছি....সকাল টা না খেয়ে,,শুধু পানি খেয়ে কাটিয়ে দিলাম....পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম ৪ টাকা আছে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে আসলো....ক্ষুদার জ্বালা টা ভালই টের পাচ্ছিলাম,,,,সহ্য হচ্ছিলো না,,,ক্ষুদার জ্বালা....আমার এক কাছের বন্ধুকে ফোন দিলাম....
_____হ্যালো দোস্ত,, তুই কোথায়??(আমি)
____এই তো বাজারে,,,কেন??(দোস্ত)
_____দাড়া,,আমি আসতেছি.....
বলেই বাজারের দিকে হাটা দিলাম....ওকে আমি অনেক খাওয়াইছি....ও নিশ্চয়ই আমাকে একদিন খাওয়াতে আপত্তি করবেনা,,,,পেটে তখন কামড় দিচ্ছিলো আমার......
বাজার গিয়ে দেখলাম,,,ও ওর কয়েকটা বন্ধুকে নিয়ে দাড়ায় আছে.....আমাকে দেখেই
_____কিরে কেমন আছিস??(দোস্ত)
_____এইতো চলছে...আজকাল যে আর দেখাই করিসনা,,,কি ব্যাপার??(আমি)
_____আসলে ব্যাস্ত থাকি রে দোস্ত তাই,,,আচ্ছা যাই রে,,,তাড়া আছে....
চলে গেল,,,
আমিও কিছুই বলতে পারলামনা.ওর বন্ধুরা ওর পাশে ছিলো....
পেটে তখন আমার এত ক্ষুধা,, যে কেউ যদি আমার রক্তের বিনিময় খেতে দেয়,,তবু আমি রাজি.....
আমি যে হেটে মেসে যাবো,,,সেই শক্তি পাচ্ছিলাম না,,,বসে পরলাম........
ক্ষুদার জ্বালা যে কতটা ভয়ানক,, আজ বুঝতে পারতেছি....
কত মানুষ আসছে,,যাচ্ছে,,, কেউ একবার ও তাকিয়ে দেখেনা আমার দিকে,,,বলেনা,,,ও না খেয়ে আছে,,ওকে কিছু খাওয়াই......
আল্লাহ মহান,,,,তিনি তো আছেন....
তিনি তো কাউকে মারেনা,,রিজিকের মালিক তিনি...আমি বসে আছি,,,,ক্ষুদার জালায় কাতরাচ্ছি,,,,এমন সময় মায়া আসলো....মায়া নাকি কি এক কাজে এদিকে আসছিলো....
# মায়া আমার কাছে আসতেই চমকে উঠলাম,,কিন্তু চুপ করে বসে আছি.....
______একি অবস্থা হয়েছে তোমার??শরীরের যত্ন নাও না??(মায়া)
______(চুপ)(আমি)
______কি হলো,,,চুপ করে আছো কেন(মায়ার চোখের কোনে পানি)
_____খুব লজ্জা লাগছে,,একটা কথা বলবো??(আমি)
_____বলো(মায়া)
______সারাদিন কিছু খাইনি,,খুব ক্ষুদা লেগেছে,,,আমাকে ৩০...৪০ টাকা ধার দিবা,,প্লিজ??
______এসো......
মায়া আমাকে নিয়ে গিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ বসালো,,,,
তারপর,,,,
ভাত,,গরুর মাংস,,ডাল,,ডিম,,ভাজি...সব অর্ডার করলো....
আমার সামনে দেয়া মাত্র গপ গপ করে গিলতে লাগলাম,,,,আর কোন দিতে খেয়াল নেই....২ প্লেট ভাত,, ডিম মাংস ভাজি,,,সব সাবার করে যেন রাক্ষুসে পেট টা ভরলো,,,এত শান্তি লাগছিলো,,,যা ভাষায় প্রকাশ করার মতনা....
মায়ার দিকে তাকালাম,,,,মায়া আমাকে দেখে কাদতেছে,,,,হয়তো বুঝতে পেরেছে,,,কারণ মায়া ভালো করেই জানে,,আমি কারো কাছে চেয়ে খাওয়ার ছেলে না.....
মায়া বিল দিল.....
তারপর বাইরে একটা একটু নির্জন জায়গায় এসে আমার হাত দুটো ধরে চোখে চোখ রেখে বললো...
______তোমার কি হয়েছে,,প্লিজ আমাকে বলো,,আমার কসম দিলাম,,বলো??(মায়া)
______আমার চাকুরীটা আরাইমাস আগে চলে গেছে...তারপর বেকার.....
_____মায়া রেগে আমার গালে ঠাস....
তারপর বললো....এটা আমাকে আগে কেন বলোনি??তাহলে এতো কষ্ট পেতামনা??তোমাকে সত্যি ভালোবাসি...সুসম
য়,,দূঃসময় সবসময়....জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো.....
আমিও বুঝলাম...মায়ার ভালোবাসা,,,আমি আসলে হয়তো এটা দেখার জন্যই আগে ওকে জানাইনি আমি বেকার....মায়া আমাকে ১৫০০ টাকা দিয়ে গেল,,,নিলাম,,কারন না নিয়ে উপায় ছিলোনা.....২ মাস ২৫ দিনের মাথায় আমার অফিস থেকে ফোন দিয়ে আমাকে আবার চাকুরীতে জয়েন দেয়ার জন্য অফার করলো,,,আর সাথে আগের থেকে ৫০০০ টাকা বেশী বেতনে.....।।আমি তো অনেক খুশী...ফিরে পেলাম চাকুরী,,,আর সাথে আমার মায়া....
দূঃসময় কেটে গেল,,,কিন্তু আমিও বদলে গেছি,,,,কেন যেন এই তিনটা মাস মনে পড়ে যায়,,,চিনে নিয়েছি অনেক মানুষকে.....
হয়তো আল্লাহ আমার পরীক্ষা নিয়েছিলো,,,,বাসার সবার সাথে যোগাযোগ নাই,,,ঝগড়া করে বন্ধ করে দিয়েছিলাম.......
এখন কেন যেন মন চাচ্ছে যোগাযোগ করতে....যারা আমাকে বড়ো করেছে,,,কখনো ক্ষুদার জালা কি বুঝতে দেয়নি.....
আজ ই আব্বুকে ফোন দিয়ে কথা বলবো....জানিনা আব্বু কেমন রিএক্ট করবে??
..
..
# খারাপ সময় গুলো থাকেনা,,,রাত যখন আছে,,,তো ভোর হবেই....কিন্তু খারাপ সময় অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়,,,যা অনেক কাজে লাগে....
চিনিয়ে দিয়ে যায় কে আসল বন্ধু.........😒

Wednesday, September 18, 2019

ক্ষমার সুন্দর এক গল্প

ক্ষমার এক অসাধারণ ঘটনা
একদিন মদীনার দুই ব্যক্তি একজন যুবককে টেনে হিছরে, অর্ধপৃথিবীর শাসক,খলীফা, হযরত
উমর রা. এর দরবারে হাজির করলো। এবং বিচার দাখিল করলো যে,এই যুবক আমাদের পিতাকে হত্যা
করেছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
তখন খলীফা (প্রধানমন্ত্রী) হযরত উমর রা. সেই যুবককে প্রশ্ন করেন, তার বিপক্ষে করা দাবী সম্পর্কে। তখন সেই যুবক বলেন,তাদের দাবী সম্পুর্ণ সত্য।
আমি ক্লান্তির কারনে বিশ্রামের জন্য এক খেজুর গাছের ছায়ায় বসলাম। ক্লান্ত শরীরে অল্পতেই
ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার একমাত্র পছন্দের বাহন আমার উট টি পাশে নেই।
খুঁজতে খুঁজতে কিছু দূর গেয়ে পেলাম, তবে তা ছিলো মৃত। পাশেই ওদের বাবা ছিলো। যে আমার
সেই উট কে তাদের বাগানে প্রবেশের অপরাধে পাথর মেরে হত্যা করেছে।
আমি ও রাগান্বিত হয়ে তাদের বাবার সাথে তর্কাতর্কি করতে করতে এক পর্যায়ে তাদের বাবার মাথায়
পাথর দিয়ে আঘাত করে ফেলি, ফলে সে সেইখানেই মারা যায়। যা সম্পুর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে
হয়ে গেছে। যার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
বাদী'রা বলেন:- আমরা এত মৃত্যুদণ্ড চাই।
হযরত উমর রা. সব শোনে বললেন উট হত্যার বদলে একটা উট নিলেই হতো, কিন্তু তুমি বৃদ্ধকে হত্যা করেছো। হত্যার বদলে হত্যা, এখন তোমাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। তোমার কোন শেষ ইচ্ছা থাকলে বলতে পারো।
নওজোয়ান বললো, আমার কাছে কিছু ঋন ও অন্যের কিছু আমানত আছে। আমাকে যদি কিছুদিন সময় দিতেন তবে আমি বাড়ি গিয়ে আমানত ও ঋন গুলি পরিশোধ করে আসতাম।
খলিফা হযরত উমর রা. বললেন তোমাকে একা ছেড়ে দিতে পারি না। যদি তোমার পক্ষ থেকে
কাউকে জিম্মাদার রেখে যেতে পারো তবে তোমায় সাময়িক মুক্তি দিতে পারি। নিরাশ হয়ে নওজোয়ান বললো, এখানে আমার কেউ নেই। যে আমার জিম্মাদার হবে।
একথা শুনে হঠাৎ মজলিসে উপস্থিত, আল্লাহর নবীর এক সাহাবী হযরত আবু জর গেফারী রা. দাড়িয়ে
বললেন, আমি হবো ওর জামিনদার।
সাহাবী হযরত আবু জর গেফারী রা. এই উত্তরে সবাই হতবাক। একেতো অপরিচিত ব্যক্তি তারউপর
হত্যার দন্ড প্রাপ্ত আসামীর জামিনদার
খলিফা বললেন আগামি শুক্রবার জুম্মা পর্যন্ত নওজোয়ানকে মুক্তি দেওয়া হলো। জুম্মার আগে নওজোয়ান মদিনায় না আসলে নওজোয়ানের বদলে আবু জরকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে।
মুক্তি পেয়ে নওজোয়ান ছুটলো মাইলের পর মাইল দূরে তার বাড়ির দিকে। আবুজর রা. চলে গেলেন তাঁর বাড়িতে।এদিকে দেখতে দেখতে জুম্মাবার এসে গেছে, নওজোয়ানের কোন খবর নেই। হযরত উমর রা. রাষ্ট্রীয় পত্রবাহক পাঠিয়ে দিলেন আবুজর গিফারি রা. এর কাছে। পত্রে লিখা আজ শুক্রবার বাদ জুমা সেই যুবক যদি না আসে আইন মোতাবেক আবুজর গিফারির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে। আবুজর যেন সময় মত জুমার প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে নববীতে হাজির হয়। খবর শোনে সারা মদীনায় থমথমে অবস্থা।
একজন নিষ্পাপ সাহাবী আবুজর গিফারী আজ বিনা দোষে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবে।
জুমার পর মদিনার সবাই মসজিদে নববীর সামনে হাজির। সবার চোখে পানি। জল্লাদ প্রস্তুত।
জীবনে কতজনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে তার হিসাব নেই। কিন্তু আজ কিছুতেই চোখের পানি আটকাতে পারছে না। আবুজরের মত একজন সাহাবী সম্পূর্ন বিনা দোষে আজ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবে, এটা মদীনার কেউ মেনে নিতে পারছে না। এমনকি মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদানকারী খলিফা উমর রা. ও অনবরত কাঁদছেন। তবু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কারো পরিবর্তনের হাত নেই। আবু জর রা. তখন ও নিশ্চিন্তে মনে হাসি মুখে দাড়িয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। জল্লাদ ধীর পায়ে আবু জর রা. এর দিকে এগুচ্ছেন আর কাদছেন। আজ যেন জল্লাদের পা চলে না। পায়ে যেন কেউ পাথর বেঁধে রেখেছে।
এমন সময় এক সাহাবী জল্লাদকে বললো, হে জল্লাদ একটু থামো। মরুভুমির ধুলার ঝড় উঠিয়ে ঐ
দেখ কে যেন আসতেছে। হতে পারে ঐটা নওজোয়ানের ঘোড়ার ধুলি। একটু দেখে নাও, তারপর না হয় আবু জরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করিও। ঘোড়াটি কাছে আসলে দেখা যায় সত্যিই এটা ঐ নওজোয়ান। নওজোয়ান দ্রুত খলিফার সামনে এসে বললো, হুযুর বেয়াদবি মাফ করবেন। রাস্তায় যদি ঘোড়ার পা'য়ে ব্যাথা না পেত,তবে সঠিক সময়েই আসতে পারতাম।
বাড়িতে আমি একটুও দেরী করি নাই। বাড়ি পৌছে গচ্ছিত আমানত ও ঋন পরিশোধ করি এবং তারপর বাড়ি এসে বাবা, মা এবং নববধুর কাছে সব খুলে বলে চিরবিদায় নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এখন আবু জর রা. ভাইকে ছেড়ে দেন, আমাকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে পবিত্র করুন। কেয়ামতে খুনি হিসেবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চাই না।
আশেপাশে সব নিরব থমথমে অবস্থা।
সবাই হতবাক, কি হতে চলেছে।
যুবকের পুনরায় ফিরে আসাটা অবাককরে দিলো সবাইকে। খলিফা হযরত উমর রা. বললেন, তুমি জানো তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, তারপরে ও কেন ফিরে এলে।
উত্তরে সেই যুবক বলে:- আমি ফিরে এসেছি,
কেউ যাতে বলতে না পারে, এক মুসলমানের বিপদে আরেক মুসলামান সাহায্য করতে এগিয়ে এসে নিজেই বিপদে পড়ে গেছিলো।
এবার হযরত উমর রা. হযরত আবু জর গেফারী রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কেন না চেনা
সত্যেও এমন জামিনদার হলেন।
উত্তরে হযরত আবু জর গেফারী রা. বললেন, পরবর্তি কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান
বিপদে পড়েছিলো, অতচ কেউ তাকে সাহায্য করতে আসেনি। এমন কথা শুনে, হঠাৎ, বৃদ্বার দুই সন্তানের মাঝে একজন বলে উঠলেন, হে খলীফা, আপনি তাকে মুক্ত করে দিন। আমরা তার উপর করা দাবী তুলে
নিলাম।
হযরত উমর রা. বললেন, কেন.?
তাদের মাঝে একজন বলে উঠলো, কেউ যেন বলতে না পারে,এক মুসলমান অনাকাঙ্ক্ষিত ভূল করে
নিজেই শিকার করে ক্ষমা চাওয়ার পরে ও অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি।  ( হায়াতুস সাহাবা:-৮৪৪)

Tuesday, September 17, 2019

গাড়ি চুরির গল্প

এক ভদ্রলোকের গাড়ি পার্কিং থেকে চুরি হয়ে গেল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও গাড়ির হদিস পেলেন না।
তবে দুই দিন পর হারানো গাড়িটাকে আগের জায়গায় দেখে অবাক। হারানো বাহন ফিরে পেয়ে ভীষণ আনন্দিত হয়ে দৌড়ে গাড়ির কাছে গেলেন। ড্রাইভিং সিটে একটা মুখবদ্ধ খাম। খুলে দেখলেন ভেতরে দেওয়া চিরকূটে লেখা, “মায়ের শরীর হঠাত্ খারাপ হয়েyy যাওয়ায় হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু একে তো রাত, তার ওপর ছুটির কারণে কোনো গাড়ি নাy পাওয়ায় আপনার গাড়ি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলাম। ”
বিনীতি ভঙ্গিতে আরো লেখা রয়েছে, “আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত। গাড়িতে যত পেট্রল ছিল, সব আগের মতো আছে। তা ছাড়া আপনার গাড়ির খারাপ তালাটাও ঠিক করে দিয়েছি। গাড়ি ব্যবহারের বিনিময়ে আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য ১০টা সিনেমার টিকিট দিলাম।

এই চিঠির খামের মধ্যেই সেগুলো পাবেন। টিকিটগুলো আগামীকালের, নাইট শো। আমি জানি, আপনার বাসার কাজের মেয়েসহ আপনারা ১০ জন। আপনাদের খাবারের জন্য রাখা আছে সিনেমা হলের ফুড কোর্টের ভাউচারও (বিল পরিশোধিত)। সিনেমা দেখার পর যা ইচ্ছা খেয়ে নেবেন। ”
সব শেষে আবারো বিনীত অনুরোধ, “আমার অনন্যোপায় অপরাধের জন্য ক্ষমা করে দেবেন!”

৪০ লাখ টাকা দামী গাড়িটা ফেরত পাওয়ায় পরিবারের সবাই ভীষণ খুশি। পরদিন উপহার পাওয়া টিকিট নিয়ে চলে সবাই গেল সিনেমা দেখতে। ছবি দেখা শেষ করে মনের মতো স্পেশাল চিকেন-রাইস-কফি-আইসক্রিম খেয়ে বের হল সবাই; কিন্তু গাড়িy তো নেই পার্কিংয়ে।

আবারো চুরি হলো গাড়িটা!?

উপায় না পেয়ে ট্যাক্সি ডেকে বাড়ি ফিরে তারা দেখলো, ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা। ঘরের সব দামি জিনিস, আসবাবপত্র, নগদ টাকা, গয়না চুরি হয়ে গেছে। ক্ষতি প্রায় কোটি টাকা।

বাইরে টেবিলে একটি খাম পড়ে আছে।

তাতে লেখা, “সিনেমা কেমন দেখলেন? গাড়িটা আবার চুরি করে নিয়ে গেলাম। আপনি কেন গাড়ির লক আর চাবি বদলাতে ভুলে গেলেন? ওদিকে বাসা একেবার ফাঁকা রেখে কেউ সিনেমা দেখতে যায়? দেখলেন তো, এতটুকু বোকামির জন্য কত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ”