ক্ষমার এক অসাধারণ ঘটনা
একদিন মদীনার দুই ব্যক্তি একজন যুবককে টেনে হিছরে, অর্ধপৃথিবীর শাসক,খলীফা, হযরত
উমর রা. এর দরবারে হাজির করলো। এবং বিচার দাখিল করলো যে,এই যুবক আমাদের পিতাকে হত্যা
করেছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
তখন খলীফা (প্রধানমন্ত্রী) হযরত উমর রা. সেই যুবককে প্রশ্ন করেন, তার বিপক্ষে করা দাবী সম্পর্কে। তখন সেই যুবক বলেন,তাদের দাবী সম্পুর্ণ সত্য।
আমি ক্লান্তির কারনে বিশ্রামের জন্য এক খেজুর গাছের ছায়ায় বসলাম। ক্লান্ত শরীরে অল্পতেই
ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার একমাত্র পছন্দের বাহন আমার উট টি পাশে নেই।
খুঁজতে খুঁজতে কিছু দূর গেয়ে পেলাম, তবে তা ছিলো মৃত। পাশেই ওদের বাবা ছিলো। যে আমার
সেই উট কে তাদের বাগানে প্রবেশের অপরাধে পাথর মেরে হত্যা করেছে।
আমি ও রাগান্বিত হয়ে তাদের বাবার সাথে তর্কাতর্কি করতে করতে এক পর্যায়ে তাদের বাবার মাথায়
পাথর দিয়ে আঘাত করে ফেলি, ফলে সে সেইখানেই মারা যায়। যা সম্পুর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে
হয়ে গেছে। যার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
বাদী'রা বলেন:- আমরা এত মৃত্যুদণ্ড চাই।
হযরত উমর রা. সব শোনে বললেন উট হত্যার বদলে একটা উট নিলেই হতো, কিন্তু তুমি বৃদ্ধকে হত্যা করেছো। হত্যার বদলে হত্যা, এখন তোমাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। তোমার কোন শেষ ইচ্ছা থাকলে বলতে পারো।
নওজোয়ান বললো, আমার কাছে কিছু ঋন ও অন্যের কিছু আমানত আছে। আমাকে যদি কিছুদিন সময় দিতেন তবে আমি বাড়ি গিয়ে আমানত ও ঋন গুলি পরিশোধ করে আসতাম।
খলিফা হযরত উমর রা. বললেন তোমাকে একা ছেড়ে দিতে পারি না। যদি তোমার পক্ষ থেকে
কাউকে জিম্মাদার রেখে যেতে পারো তবে তোমায় সাময়িক মুক্তি দিতে পারি। নিরাশ হয়ে নওজোয়ান বললো, এখানে আমার কেউ নেই। যে আমার জিম্মাদার হবে।
একথা শুনে হঠাৎ মজলিসে উপস্থিত, আল্লাহর নবীর এক সাহাবী হযরত আবু জর গেফারী রা. দাড়িয়ে
বললেন, আমি হবো ওর জামিনদার।
সাহাবী হযরত আবু জর গেফারী রা. এই উত্তরে সবাই হতবাক। একেতো অপরিচিত ব্যক্তি তারউপর
হত্যার দন্ড প্রাপ্ত আসামীর জামিনদার
খলিফা বললেন আগামি শুক্রবার জুম্মা পর্যন্ত নওজোয়ানকে মুক্তি দেওয়া হলো। জুম্মার আগে নওজোয়ান মদিনায় না আসলে নওজোয়ানের বদলে আবু জরকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে।
মুক্তি পেয়ে নওজোয়ান ছুটলো মাইলের পর মাইল দূরে তার বাড়ির দিকে। আবুজর রা. চলে গেলেন তাঁর বাড়িতে।এদিকে দেখতে দেখতে জুম্মাবার এসে গেছে, নওজোয়ানের কোন খবর নেই। হযরত উমর রা. রাষ্ট্রীয় পত্রবাহক পাঠিয়ে দিলেন আবুজর গিফারি রা. এর কাছে। পত্রে লিখা আজ শুক্রবার বাদ জুমা সেই যুবক যদি না আসে আইন মোতাবেক আবুজর গিফারির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হবে। আবুজর যেন সময় মত জুমার প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে নববীতে হাজির হয়। খবর শোনে সারা মদীনায় থমথমে অবস্থা।
একজন নিষ্পাপ সাহাবী আবুজর গিফারী আজ বিনা দোষে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবে।
জুমার পর মদিনার সবাই মসজিদে নববীর সামনে হাজির। সবার চোখে পানি। জল্লাদ প্রস্তুত।
জীবনে কতজনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে তার হিসাব নেই। কিন্তু আজ কিছুতেই চোখের পানি আটকাতে পারছে না। আবুজরের মত একজন সাহাবী সম্পূর্ন বিনা দোষে আজ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবে, এটা মদীনার কেউ মেনে নিতে পারছে না। এমনকি মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদানকারী খলিফা উমর রা. ও অনবরত কাঁদছেন। তবু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কারো পরিবর্তনের হাত নেই। আবু জর রা. তখন ও নিশ্চিন্তে মনে হাসি মুখে দাড়িয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। জল্লাদ ধীর পায়ে আবু জর রা. এর দিকে এগুচ্ছেন আর কাদছেন। আজ যেন জল্লাদের পা চলে না। পায়ে যেন কেউ পাথর বেঁধে রেখেছে।
এমন সময় এক সাহাবী জল্লাদকে বললো, হে জল্লাদ একটু থামো। মরুভুমির ধুলার ঝড় উঠিয়ে ঐ
দেখ কে যেন আসতেছে। হতে পারে ঐটা নওজোয়ানের ঘোড়ার ধুলি। একটু দেখে নাও, তারপর না হয় আবু জরের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করিও। ঘোড়াটি কাছে আসলে দেখা যায় সত্যিই এটা ঐ নওজোয়ান। নওজোয়ান দ্রুত খলিফার সামনে এসে বললো, হুযুর বেয়াদবি মাফ করবেন। রাস্তায় যদি ঘোড়ার পা'য়ে ব্যাথা না পেত,তবে সঠিক সময়েই আসতে পারতাম।
বাড়িতে আমি একটুও দেরী করি নাই। বাড়ি পৌছে গচ্ছিত আমানত ও ঋন পরিশোধ করি এবং তারপর বাড়ি এসে বাবা, মা এবং নববধুর কাছে সব খুলে বলে চিরবিদায় নিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এখন আবু জর রা. ভাইকে ছেড়ে দেন, আমাকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে পবিত্র করুন। কেয়ামতে খুনি হিসেবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চাই না।
আশেপাশে সব নিরব থমথমে অবস্থা।
সবাই হতবাক, কি হতে চলেছে।
যুবকের পুনরায় ফিরে আসাটা অবাককরে দিলো সবাইকে। খলিফা হযরত উমর রা. বললেন, তুমি জানো তোমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, তারপরে ও কেন ফিরে এলে।
উত্তরে সেই যুবক বলে:- আমি ফিরে এসেছি,
কেউ যাতে বলতে না পারে, এক মুসলমানের বিপদে আরেক মুসলামান সাহায্য করতে এগিয়ে এসে নিজেই বিপদে পড়ে গেছিলো।
এবার হযরত উমর রা. হযরত আবু জর গেফারী রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কেন না চেনা
সত্যেও এমন জামিনদার হলেন।
উত্তরে হযরত আবু জর গেফারী রা. বললেন, পরবর্তি কেউ যেন বলতে না পারে, এক মুসলমান
বিপদে পড়েছিলো, অতচ কেউ তাকে সাহায্য করতে আসেনি। এমন কথা শুনে, হঠাৎ, বৃদ্বার দুই সন্তানের মাঝে একজন বলে উঠলেন, হে খলীফা, আপনি তাকে মুক্ত করে দিন। আমরা তার উপর করা দাবী তুলে
নিলাম।
হযরত উমর রা. বললেন, কেন.?
তাদের মাঝে একজন বলে উঠলো, কেউ যেন বলতে না পারে,এক মুসলমান অনাকাঙ্ক্ষিত ভূল করে
নিজেই শিকার করে ক্ষমা চাওয়ার পরে ও অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি। ( হায়াতুস সাহাবা:-৮৪৪)
Books poem in bangla and with analysis Verse-wise Bangla Translation: What worlds of wonder are our books! As one opens them and looks, New ideas and people rise In our fancies and our eyes. আমাদের বইগুলো কী আশ্চর্য এক জগৎ! যখনই কেউ তা খুলে দেখে, নতুন ভাবনা আর নতুন মানুষ জেগে ওঠে কল্পনায় ও চোখের সামনে। The room we sit in melts away, And we find ourselves at play With some one who, before the end, May become our chosen friend. আমরা যে ঘরে বসে আছি, তা যেন মিলিয়ে যায়, আর আমরা আবিষ্কার করি নিজেদের খেলায় মত্ত কাউকে সঙ্গে নিয়ে, যে হয়তো শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠবে। Or we sail along the page To some other land or age. Here's our body in the chair, But our mind is over there. অথবা আমরা পৃষ্ঠার ওপর দিয়ে ভাসতে থাকি অন্য কোনো দেশ বা কালের দিকে। আমাদের শরীরটা রয়েছে চেয়ারে, কিন্তু মন চলে গেছে দূরে অন্য কোথাও। Each book is a magic box Which with a touch a child unlocks. In between their outside covers Books hold all things for their lovers. প্রতিটি বই একেকটি জাদুর বাক্স, যা শিশুরা এক ...
Comments
Post a Comment