সময় টা ২০০৯,
আমি সেসময় কাজ করি এশিয়ান পেইন্টস লিঃ এ খুলনা টেরিটোরি সেলস ইনচার্জ হিসাবে। জব চেঞ্জ করব বলে জব ছাড়লাম। রিজাইন লেটার জমা দিলাম। ফিনান্সিয়াল হিসাব আর চার্জ বুঝিয়ে দেয়া সহ অন্যান্য ফর্মালিটিও মোটামুটি শেষ। শেষ দিন আমাকে হঠাৎই ডাকা হল হেড অফিসের এইচ আর এ।
গেলাম...
সেখানে ছিলেন এইচ আর হেড আর সাথে কোম্পানীর কান্ট্রি চিফ। উনি ছিলেন ইন্ডিয়ান। আমাকে হাসিমুখেই বসতে বললেন। খোলাখুলিভাবে বললেন আপনার একটা ইন্টারভিউ বাকী আছে। আমি মোটামুটি অবাক, আবার ভীতও...
আমাকে সাহস দিতে বললেন এটা জব এক্সিট ইন্টারভিউ। আপনি যেদিন চাকরীর জন্য এসেছিলেন সেদিন একটা ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন, আর আজ যাবার বেলায় আর একবার..... আমার কাছে কন্সেপ্ট টা ছিল একেবারে নতুন। আমাকে আরো সাহস দিতে তারা যেটা বললেন তার মর্মার্থ হল - একজন এপ্লয়ী যখন চলে যান জব কুইট করে, তখন তার অনুভূতি জানতে চাওয়াই এই ইন্টারভিউ এর উদ্দেশ্য! কেমন ছিল এখানের পরিবেশ, কাজের দিনগুলোতে পাওয়া সহযোগীতা এবং অসহযোগীতা, কোনো অভিযোগ, ক্ষোভ বা অপ্রাপ্তি, আবার ভবিষ্যতে কখনো আসার ইচ্ছা থাকবে কিনা, অথবা অন্যদের-ও এখানে কাজের কথা শুনলে উৎসাহিত করব কিনা - এসব শোনা হল আমার কাছে, আর ফাইনালী শোনা হল কোন পরামর্শ অথবা একজন কর্মী হিসাবে আমার কোনো পরামর্শ থাকলে তা যেন আমি শেয়ার করি যাতে এই পজিশন এ এরপর যিনি আসবেন তার কাজের পরিবেশ আরো সুন্দর হয়।
আমি সেদিন বিস্মিত হয়ে গেছিলাম। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি হিসাবে তাদের কাজের সুযোগ সুবিধা আমার কাছে সবসময়ই ভাল ছিল, কিন্তু একটা গোছানো এইচ আর পলিসির কর্মপরিকল্পনা বা কর্মী মূল্যায়ন এতোটা আকর্ষণীয় হতে পারে আমার কল্পনায় ছিলনা।
অনেকগুলো বছর কেটে গেছে, সেদিন আমি এক্সিট ইন্টারভিউ এর গুরুত্ব টা ততোটা বুঝতে না পারলেও ঘটনা টা আমার মনে এতোটাই দাগ ফেলেছিল আমি এতগুলো বছরেও ভুলতেই পারিনা এক্সিট ইন্টারভিউ নামে একজন কর্মীর বিদায় বেলার ওই অভিজ্ঞতা।
No comments:
Post a Comment