Tuesday, April 24, 2018

মৃত্যু আপনার কাছেই অথবা মৃত্যুর কাছাকাছি আপনি

#শিক্ষনীয়_পোষ্ট
ঘটনা ১ঃ
" আব্দুর রহিম সাহেব চাকুরি থেকে আজই অবসর নিয়েছেন। কলিগদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার পথে রওনা হয়েছেন। পার্থিব জীবনের ব্যস্ততায় আখিরাতের কথা খুব একটা মাথায় আসে নি তার। এখন বয়স হয়েছে। বিশ্রাম নেওয়ার পালা। রাস্তায় হাটছেন এবং ভাবছেন,"নাহ! এইভাবে আর চলা যাবে না। বয়স হয়েছে। নামাজটা ঠিকমতন ধরতে হবে। সামনে হজ্জ। টাকা দিয়ে বুকিং করে রাখতে হবে। ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গেছে। তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও ভাবতে হবে।" ভেবেই চলেছেন। সারাজীবনের চিন্তা যেনো আজই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ভাবতে ভাবতে হঠাৎই বুকে চিনচিনিয়ে ব্যথা শুরু হয়ে গেলো। ক্রমশই বাড়ছে। কোনভাবেই কমছে না। অবস্থা বেগতিক দেখে আব্দুর রহিম সাহেব সামনের দোকানের বেঞ্চের দিকে আগাতে থাকলেন। একটু বসে শান্ত হওয়ার চেষ্টার তাগিদে। কিন্তু ১০ মিটারের পথটাও যে আর শেষ হচ্ছে না! এরই মধ্যে মাথা ঘোরানো শুরু। এক কদম বাড়ানোর পড়েই রফিক সাহেবের হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলো। ধপাস করে পড়ে গেলেন। আশপাশ থেকে আব্দুর রহিম সাহেবকে নিয়ে তাড়াহুড়ো হচ্ছে। আব্দুর রহিম সাহেব বুঝলেন যে লোকজন তাকে ধরাধরি তারা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাথে সাথে আব্দুর রহিম সাহেব এও বুঝে গেছেন যে তার সময় শেষ।"
.
ঘটনা ২ঃ
"রুবেল এশারের নামাজ পড়ে এসেছে। শুভ হোস্টেলেই ছিলো। দুইজনে খুবই কাছের বন্ধু। কোনো কথাই গোপন নেই রুবেল আর শুভর মধ্যে। রুবেল দেখলো শুভ ল্যাপটপে চ্যাটিং এ ব্যস্ত। শুভ হঠাৎ খুব খুশি হয়ে রুবেলের নিকট বসলো।
'কিরে কিছু বলবি?', রুবেলের প্রশ্ন।
শুভ মুখ আটকাতে পারলো না।
'দোস্ত! হইছে অবশেষে! রুণা মানছে!', উত্তেজিত শুভ বললো।
'মানে?', রুবেলের প্রশ্ন।
'আরে তোরে বলছিলাম না যে রুনাকে প্রপোজ করেছিলাম, ও মানছে। কাল দেখা করবো।', শুভর উত্তর।
'এই নাকি তোর নামাজে না যাওয়ার কারণ ছিলো!', রুবেল বলল।
'আরে পরে পড়ে নিবোনে। কালকে ক্যাফেতে ডাকছে।', শুভ বলল।
'দোস্ত, কি লাভ এইগুলা করে?শুধুই ঈমান নষ্ট আর গুনাহ এর কারবার!', রুবেল বললো।
'আরে দোস্ত, সমস্যা নাই! বয়স তো বেশি না, এখনিই কইরা নেই। আস্তে আস্তে সব হবে।', শুভ বলল।
'নাহ, লাভ নেই! আল্লাহই হেদায়েত দান করুক তোকে!', রুবেল বললো।
'আমিন' বলে শুভ লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়লো। জানালায় পর্দা নেই। তার উপরে পূর্ণিমা রাত। আলো গিয়ে পড়েছে শুভর আলনা আর টেবিলের পাশে। আলনায় কাপড় চোপড় দেখা যাচ্ছে। শুভ ভাবছে কালকে কি পড়বে! আর যাই হোক, প্রথম সাক্ষাত, ইমপ্রেস করতেই হবে! কেলভিন ক্লাইনের টি শার্ট আর প্যান্ট এর দিকে চোখ পড়লো শুভ'র। তাকিয়ে শুভ ভাবলো,
"নাহ! এতেই হবে। সাথে একটু পারফিউম।" ভেবে ঘুমিয়ে পড়লো শুভ। সকালে ফজরের নামাজের জন্য রুবেল শুভকে ডাক দিলো। সাধারণত এক দুই ডাকেই শুভ পাত্তা দেয়। কিন্তু নাহ! আজ রুবেল এতোবার ডেকেই চলেছে, শুভ কোনো কথা বলছে না! ভয় পেলো রুবেল। পালস চেক করে বুঝলো ভয়টাই সত্যি হয়েছে। শুভ আর নেই! আল্লাহর ডাক এসেছিলো। চলে গেছে।"
দুটো ঘটনা। একটি ক্যারিয়ার গঠনের পরে, আরেকটি গঠনের আগে। কিন্তু একটা মিল রয়েছে। দুজনেই "ফিরে আসা"-র চিন্তা করেছিলো। কিন্তু তারা বুঝে উঠে নি যে তাদের হাতে সময় একেবারেই নেই। ভাবতে ভাবতেই তাদের ডাক এসে পড়ছিলো!
.
এখনো বেঁচে আছেন? নিঃশ্বাস নিতে পারছেন আলহামদুলিল্লাহ। এখন আপনার বয়স অনুযায়ী আপনার বর্তমান অবস্থান একবার উপরের দুই ব্যক্তির সাথে মিলিয়ে দেখুন তো। মিল পেয়েছেন? প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে? মিলছে? তাহলে ভেবে দেখুন একবার, যদি আজ সকালের ডাকটা আপনাকে আপনার মা/বাবা/বন্ধু না দিয়ে কবরের মালাকুল মউত দেয়? কী করবেন?
.
ভয় লাগছে? তাহলে বিপথে আছেন কেনো? সব চাইতে বড় আশার কি জানেন? আপনার সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি! ফিরে আসাটা কি সম্ভব নয়? ভেবে দেখুন!
♠♠♠♠♠♠♠
(সংকলিত ফেসবুক থেকে)

No comments:

Post a Comment