A collection of paragraph,letter,email,application,dialogue,grammar,story,song,education , examination result, jsc,ssc and Hsc exam realated English grammar and composition part .
Tuesday, September 26, 2023
একজন অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধার কাহিনি
Monday, September 18, 2023
যেভাবে মাপা হলো পৃথিবীর ওজন
যেভাবে মাপা হলো পৃথিবীর ওজন
ক্যাভেন্ডিসের পরীক্ষা
যেভাবে মাপা হলো পৃথিবীর ওজন
পৃথিবীর ওজন কত? কৌতূহলী প্রশ্ন বটে। যাঁরা একটু বিজ্ঞান সচেতন, তাঁরা জানেন, প্রশ্নটা বলে আসলে ওজন বোঝানো হচ্ছে না। জানতে চাওয়া হচ্ছে ভর। সঠিক প্রশ্নটা তাই হবে, পৃথিবীর ভর কত? গুগল করলেই পাওয়া যাবে উত্তর। ৫.৯৭২×১০২৪ কেজি।
এখন আসল প্রশ্নটা। কৌতূহলী হলে নিশ্চয়ই আপনার মাথায় এসেছে। পৃথিবীর এই ভর (বা চলতি ভাষায় ‘ওজন’) মাপা হলো কীভাবে? মজা করে কেউ কেউ বলতেই পারেন, একটা বিশাল পাল্লায় পৃথিবীটাকে বসিয়ে মেপে ফেললেই তো হয়, নাকি! তা, অমন দুষ্টবুদ্ধি আপনার আগেও আরও অনেকের মাথায়ই এসেছে। এই যেমন ১৯ শতকের একটা মজার ছবির কথাই ধরুন। সিনাগগ নামের একটি বিখ্যাত বইতে এর বিষয়বস্তুর উল্লেখ আছে। বইটার লেখক গ্রিক সভ্যতার পড়ন্ত বেলার অন্যতম সেরা গণিতজ্ঞ প্যাপাস অব আলেকজান্দ্রিয়া। তিনি আর্কিমিডিসের একটা উক্তি তুলে ধরেছেন, সে অনুযায়ী ১৯ শতকের এই দুষ্ট (কিংবা হয়তো সিরিয়াসই, কে জানে!) ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটা সি-স রাইডের একপাশে বসে আছেন আর্কিমিডিস, অন্য পাশে পৃথিবীটা রাখা। (সি-স রাইড মানে, পার্কে ঢেঁকির মতো যে রাইড থাকে। দুপাশে দুজন বসতে পারেন। যাঁর ভর বেশি, তার পাশটা নেমে যায়। হালকা ভরের মানুষটি উঠে যান ওপরের দিকে।)
পৃথিবীর দিকটা নেমে গেছে নিচে ভরের জন্য। সঙ্গে আর্কিমিডিসের উক্তি, ‘আমাকে যথেষ্ট বড় একটা লিভার (এক্ষেত্রে তক্তা) দাও, একটা ফালক্রাম দাও ওটাকে বসানোর জন্য, আমি পৃথিবীটাকে তার কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দেব।’
মানুষটা আর্কিমিডিস বলে কথা। এই বিজ্ঞানী সত্যি সত্যিই পৃথিবীটাকে আড় দিয়ে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে দেখতেই পারতেন। বিজ্ঞানীদের মন-মেজাজের তো কোনো ঠিক নেই!
বলা বাহুল্য, এভাবে পৃথিবীর ওজন মাপা যায়নি। এই চেষ্টাটা প্রথম করেছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হেনরি ক্যাভেন্ডিস। ১৭৯৮ সালে তিনি পৃথিবীর ওজন মাপার এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞানীদের কথা ভাবলেই আপনার মাথায় যে ছবি ফুটে ওঠে, গোমড়া মুখ, অসামাজিক—তার মধ্যে ক্যাভেন্ডিসকে সহজেই বসানো যায়। যদিও বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ওরকম মুখ গোমড়া করে থাকেন না। আজকের বিজ্ঞানীরা ইউটিউবে ভিডিও বানান, বই লেখেন, রসিকতাও করেন। তবে ক্যাভেন্ডিস যেহেতু সেই চিরায়ত ‘বিজ্ঞানী’ ধারণার মূর্ত প্রতীক, কথিত আছে, তাঁর কাপড়-চোপড়ের ধাঁচ ছিল তাঁর কালের চেয়ে ৫০ বছর পুরোনো। অসামাজিক ধরনের ছিলেন, নারীদের ভয় পেতেন। পড়শিরা যেন না দেখে, সেজন্য হাঁটতে বের হতেন রাতের বেলা। ধনী মানুষ ছিলেন। নিজের ভৃত্যদের সঙ্গে যেন দেখা না হয়, সে জন্য তাঁর আলাদা সিঁড়িও ছিল!
সে কালের বেশিরভাগ বিজ্ঞানীর মতোই ক্যাভেন্ডিস ছিলেন ধনী। নিজ খরচেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারতেন। নিজের বাসাকেই বানিয়ে নিয়েছিলেন গবেষণাগার।
তাঁর প্রায় ১০০ বছর আগে স্যার আইজ্যাক নিউটন মহাকর্ষ সূত্র প্রকাশ করে গেছেন। সেই সূত্রটা আমাদের পরিচিত। সূত্রটায় যে দুটো বস্তুর মধ্যকার মহাকর্ষ বল মাপতে চাওয়া হয়, তাদের ভর ও মহাকর্ষীয় ধ্রুবক গুণ করতে হয়। তারপর বস্তু দুটোর দূরত্বের বর্গ দিয়ে ভাগ করে দিলেই হলো। কেল্লাফতে!
ঘটনা হলো, নিউটন কিন্তু নিজে এই মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান বের করার কোনো চেষ্টা করেননি। পৃথিবীর ভরও মাপতে চাননি। ১৭ শতকে এসে বিজ্ঞানীদের এই কৌতূহল মাথাচাড়া দেয়। তখন নানা জন নানাভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। কেউ কেউ প্রস্তাব করেন, ভর মাপার জন্য ঘনত্ব মাপা যেতে পারে। ১৭৭২ সালে রয়্যাল সোসাইটি রীতিমতো ‘কমিটি অব অ্যাট্রাকশন’ বা আকর্ষণ পরিষদ গঠন করে। তাদের কাজ, পৃথিবীর আকর্ষণ ও ঘনত্ব পরিমাপ করা। এ সময় একটা প্রস্তাব আসে, খুব সুষম গঠনের একটা পাহাড়ের ওপর পেন্ডুলাম দুলিয়ে ওটার ওপর মাধ্যাকর্ষণের টান পরিমাপ করা যেতে পারে। যদিও এই প্রভাব হবে খুব সামান্য। সেই পরিষদ কিন্তু তাতে দমে যায়নি। ক্যাভেন্ডিসও সেই দলে ছিলেন। তাঁরা স্কটল্যান্ডের বিশাল এক পর্বতের ওপর এরকম পেন্ডুলাম দুলিয়ে হিসাব করে দেখলেন, পৃথিবীর ঘনত্ব পানির সাড়ে ৪ গুণ। (এটা সঠিক হিসাব নয়।) ক্যাভেন্ডিস দেখলেন, এই পরীক্ষায় এমন কিছু অনুমানের ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যেগুলোর কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই। কাজেই, তিনি বুঝলেন, এভাবে হবে না।
বয়স বাড়ছে। ক্যাভেন্ডিস ভাবছেন কী করা যায়। মেঘে মেঘে হোক কিংবা সমুদ্রে পানি গড়িয়ে হোক, ক্যাভেন্ডিসের বয়স যখন ৬৭, তখন তাঁর মাথায় চমৎকার এক আইডিয়া এল। বিজ্ঞানের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়া।
২
১৭৯৭ সালের কথা। ক্যাভেন্ডিস তাঁর আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করলেন। এক বন্ধু—ভূতত্ত্ববিদ রেভারেন্ড (পাদ্রী) জন মিচেল—তাঁকে একটা টরসন ব্যালেন্স দিয়েছিলেন। জিনিসটা তাঁর কাজের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ক্যাভেন্ডিস সেটাকে একটু ঠিকঠাক করে নিলেন প্রথমে।
এখন কথা হলো, টরসন ব্যালেন্স জিনিসটা কী? এই যন্ত্রে ৬ ফুট দৈর্ঘ্যের একটা কাঠের দণ্ড ছিল। আড়াআড়িভাবে দণ্ডটাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল একটা তার দিয়ে। এই দণ্ডের দুই প্রান্তে যুক্ত ছিল ২ ইঞ্চি ব্যাসের ০.৭৩ কেজি ভরের দুটো সীসার বল। তারপর তিনি ছবির মতো করে ছোট বল দুটোর সঙ্গে দুটো বড় সীসার বল বিপরীতভাবে দুপাশে আটকে দিলেন। এই বল দুটোর ব্যাস ১২ ইঞ্চি, ভর ১৫৮ কেজির মতো। এখানে আইডিয়াটা হলো, বল দুটোর পারস্পরিক আকর্ষণের কারণে সুতোটা সামান্য মোচড় খাবে। এরকম দুটো সাধারণ বস্তুর মধ্যকার মহাকর্ষ বল আসলে অতি অতি সামান্য। কিন্তু বল দুটোর মধ্যকার আকর্ষণ বল পরিমাপ করা সম্ভব।
ক্যাভেন্ডিস দিন-রাত এই পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করে আকর্ষণ বল মাপলেন। বস্তু দুটোর ভর তিনি জানেন, জানেন এদের দূরত্ব। এর মাধ্যমে সহজেই হিসাব করে মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, G-এর মান বের করে ফেলা সম্ভব।
ব্যস! এখান থেকে এবারে শুধু আরেকটি সূত্রে G-এর মান বসানোর অপেক্ষা। সূত্রটি হয়তো অনেকেরই পরিচিত। এই সূত্রে বসিয়ে পৃথিবীর ভর বা ঘনত্ব হিসাব করেছেন মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অনেক শিক্ষার্থী। সূত্রটির একদম খুঁটিনাটি ব্যাখ্যায় আমরা যাব না। তবে আগ্রহীরা সূত্রটি দেখে নিতে পারেন—
এখানে G মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, Rearth পৃথিবীর ব্যাস, g মহাকর্ষীয় ত্বরণ বা আকর্ষণ, ρearth পৃথিবীর ঘনত্ব। (কেউ হয়তো জিজ্ঞাসা করতেই পারেন, পৃথিবীর ব্যাস কীভাবে মাপা হলো? সে জন্য এই লেখাটি পড়তে পারেন—পৃথিবী কত বড়)
এবারে দুটো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বলা প্রয়োজন। এক, ক্যাভেন্ডিস ঠিক ভর নয়, মেপেছিলেন পৃথিবীর ঘনত্ব। (সূত্রের একদম ডানের অংশটিতে ‘ρearth’ পৃথিবীর ঘনত্ব বোঝাচ্ছে।) ৫৭ পৃষ্ঠার যে গবেষণাপত্র তিনি প্রকাশ করেন, এর শিরোনাম ছিল ‘এক্সপেরিমেন্টস টু ডিটারমাইন দ্য ডেনসিটি অব দি আর্থ’। এ গবেষণাপত্রে এই ঘনত্বের মান ছিল। সেই সঙ্গে ছিল মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান। ক্যাভেন্ডিস মেপে দেখেছিলেন, পৃথিবীর ঘনত্ব পানির চেয়ে ৫.৪৮ গুণ বেশি। বর্তমানে আমরা জানি, এটা আসলে ৫.৫২ হবে। সে কালে ক্যাভেন্ডিস এত কাছাকাছি গিয়েছিলেন, এটা রীতিমতো বিস্ময়কর!
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, ক্যাভেন্ডিসের এই পরীক্ষাটিকে পরে বিজ্ঞানীরা আরও উন্নত করেছেন, আরও ভালোভাবে করে দেখেছেন। মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, G-এর মান এই বিজ্ঞানীর পরীক্ষা থেকে আদর্শ হিসাবে গৃহীত হয়নি, হয়েছে আরও ৭৫ বছর পরে এসে। একটা কারণ তো আগেই বললাম, তিনি বিষয়টাকে পৃথিবীর ঘনত্বের পরিমাপ হিসেবে প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয় কারণ, ৫৭ পৃষ্ঠার সেই গবেষণাপত্রে তিনি এই পরীক্ষার নাম দিয়েছিলেন ‘ওয়েইং দ্য ওয়ার্ল্ড’, যার অর্থ বিশ্বের ওজন পরিমাপ। রিচার্ড ফাইনম্যান তাঁর ক্যারেক্টার অব ফিজিক্যাল ল বইতে লিখেছেন, পরীক্ষাটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ওয়েইং দ্য আর্থ’ বা পৃথিবীর ওজন পরিমাপ।
ফাইনম্যানের ভাষায়—
ক্যাভেন্ডিস তাঁর এ পরীক্ষার নাম দিয়েছিলেন ‘পৃথিবীর ওজন মাপা’। আজকের দিনের যত্নশীল ও খুঁতখুঁতে শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা শিক্ষার্থীদের এটা বলতে দিই না। আমাদের বলতে হয় ‘পৃথিবীর ভর পরিমাপ’।
ভরকে ওজন বলার চিরায়ত রীতি যে ক্যাভেন্ডিসের মতো চিরায়ত ঘরানার মানুষ অনুসরণ করবেন, তা আর বলতে!
সে যাইহোক, বর্তমানে অবশ্য এ পরীক্ষাটিকে শুধুই মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের মান নির্ণয়ের পরীক্ষা হিসাবে দেখা হয়। বিজ্ঞানীরা বলেন, ক্যাভেন্ডিসের পরীক্ষা।
সে যাই হোক, তাঁর এ পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রথম জানা গিয়েছিল, আমাদের পায়ের নিচের গোলকটি কতটা ভারী। সে জন্য বিজ্ঞানের ইতিহাসে হেনরি ক্যাভেন্ডিস আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
লেখক: সহসম্পাদক, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি, উইকিপিডিয়া
রিচার্ড ফাইনম্যান/ক্যারেকটার অব ফিজিক্যাল ল
Sunday, September 17, 2023
জীবনে কিছু করতে চাইলে বাসের ড্রাইভারের মত হও
দুই কলশীর নীতি গল্প
Friday, September 15, 2023
নফস কে নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে কিছু পরামর্শ
Sunday, September 10, 2023
জীবনের হিসাব
জীবনের হিসাব
জীবন বিনিময়
জীবন বিনিময় - গোলাম মোস্তফা
বাদশা বাবর কাঁদিয়া ফিরিছে, নিদ নাহি চোখে তাঁর-
পুত্র তাঁহার হুনায়ন বুঝি বাঁচে না এবার আর!
চারিধারে তার ঘনায়ে আসিছে মরন-অন্ধকার।
রাজ্যের যত বিজ্ঞ হেকিম কবিরাজ দরবেশ
এসেছে সবাই, দিতেছে বসিয়া ব্যবস্থা সবিশেষ,
সেবাযত্নের বিধিবিধানের ত্রুটি নাহি এক লেশ।
তবু তাঁর সেই দুরন্ত রোগ হটিতেসে নাকো হায়,
যত দিন যায়, দুর্ভোগ তার ততই বারিয়া যায়—
জীবন-প্রদীপ নিভিয়া আসিছে অস্তরবির প্রায়।
শুধাল বাবর ব্যগ্রকন্ঠে ভিষকব্রিন্দে ডাকি,
‘বলো বলো আজি সত্যি করিয়া, দিও নাকো মোরে ফাঁকি,
এই রোগ হতে বাদশাজাদার মুক্তি মিলিবে নাকি?”
নতমস্তকে রহিল সবাই, কহিল না কোনো কথা,
মুখর হইয়া উঠিল তাঁদের সে নিষ্ঠুর নীরবতা
শেলসম আসি বাবরের বুকে বিঁধিল কিসের ব্যাথা!
হেনকালে এক দরবেশ উঠি কহিলেন—‘সুলতান,
সবচেয়ে তব শ্রেষ্ট যে-ধন দিতে যদি পার দান,
খুশি হয়ে তবে বাঁচাবে আল্লা বাদশাজাদার প্রান।’
শুনিয়া সে কথা কহিল বাবর শঙ্কা নাহিক মানি-
‘তাই যদি হয়, প্রস্তুত আমি দিতে সেই কোরবানি,
সবচেয়ে মোর শ্রেষ্ঠ যে ধন জানি তাহা আমি জানি।’
এতেক বলিয়া আসন পাতিয়া নিরিবিলি গৃহতল
গভীর ধেয়ানে বসিল বাবর শান্ত অচঞ্চল,
প্রার্থনারত হাতদুটি তাঁর, নয়নে অশ্রু জল।
কহিল কাঁদিয়া- ‘হে দয়াল খোদা, হে রহিম রহমান,
মোর জীবনের সবচেয়ে প্রিয় আমারি আপন প্রাণ,
তাই নিয়ে প্রভু পুত্রের প্রান কর মোরে প্রতিদান।’
স্তব্ধ-নীরব গৃহতল, মুখে নাহি তার বাণী,
গভীর রজনী, সুপ্তি-মগন নিখিল বিশ্বরাণী,
আকাশে বাতাসে ধ্বনিতেছে যেন গোপন কী কানাকানি।
সহসা বাবর ফুকারি উঠিল—’নাহি ভয় নাহি ভয়,
প্রার্থনা মোর কবুল করেছে আল্লাহ হে দয়াময়,
পুত্র আমার বাঁচিয়া উঠিবে—মরিবে না নিশ্চয়।’
ঘুরিতে লাগিল পুলকে বাবর পুত্রের চারিপাশ
নিরাশ হৃদয় সে যেন আশায় দৃপ্ত জয়োল্লাস,
তিমির রাতের তোরণে তোরণে ঊষার পূর্বাভাস।
সেইদিন হতে রোগ-লক্ষণ দেখা দিলে বাবরের,
হৃষ্টচিত্তে গ্রহন করিল শয্যা সে মরণের,
নতুন জীবন হুমায়ুন ধিরে বাঁচিয়া উঠিল ফের।
মরিল বাবর – না, না ভুল কথা, মৃত্যু কে তারে কয়?
মরিয়া বাবর অমর হয়েছে, নাহি তার কোন ক্ষয়,
পিতৃস্নেহের কাছে হইয়াছে মরনের পরাজয়!
Friday, September 8, 2023
গল্প হলেও অনেক স্বামী স্ত্রীর বাস্তবতার শিকার
গণিতের ৫টি চমৎকার কৌশল
গণিতের ৫টি চমৎকার কৌশল
গণিতে অনেক মজার কৌশল আছে। সেগুলো না জানা থাকলে গণিতের আসল মজা বোঝা যায় না। গণিত তখন খটমট কঠিন বিষয়ে পরিণত হয়। তবে আজ আমরা পাঁচটি গণিতের কৌশল শিখবো। এ সহজ কৌশলগুলো আপনাকে আরও দ্রুত ও সহজে গণণা করতে সাহায্য করবে। নিজের গাণিতিক স্কিল বাড়ানোর পাশাপাশি আপনি এ কৌশলের সাহায্যে শিক্ষক, পিতামাতা ও বন্ধুদের প্রভাবিত করতে পারেন। চলুন কৌশলগুলো জানা যাক।
১. ৬ দিয়ে গুণ
যেকোনো সংখ্যাকে ৬ দিয়ে গুণের একটি সহজ পদ্ধতি আছে। যে সংখ্যা দিয়ে ৬-কে গুণ করবেন সেটি হবে উত্তরের শেষ সংখ্যা (ডিজিট)। আর ওই শেষ ডিজিটের অর্ধেক বসবে তার ঠিক আগে। যেমন, ৬ × ৪ = ২৪। খেয়াল করুন, এখানে ৬-কে গুণ করেছি ৪ দিয়ে। উত্তরে শেষ সংখ্যা হবে ৪। আর ৪-এর অর্ধেক ২ হবে তার আগে।
তবে ৬-কে যদি ৯-এর ওপরের কোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করেন, তাহলে আরেকটু নিয়ম জানতে হবে। ১০-১৯ এর মধ্যে কোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যে সংখ্যা দিয়ে গুণ করবেন, তার অর্ধেকের সঙ্গে ১ যোগ করতে হবে। ২০-২৯ এর মধ্যে কোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যোগ করতে হবে ২। এভাবে যত ওপরের দিকে যাবেন, তত যোগ করতে হবে। যেমন, ১২ × ৬ করুন। প্রথমে বসবে ২। এরপর ১২-এর অর্ধেক ৬ এবং তার সঙ্গে ১ যোগ করে হবে ৭। অর্থাৎ, উত্তর ৭২।
আবার ৪৬ × ৬ করুন। প্রথমে বসবে ৬। এর সঙ্গে ৪৬-এর অর্ধেক ২৩ ও যোগ হবে ৪। মানে ২৩ + ৪ = ২৭। তাহলে উত্তর হবে ২৭৬।
২. উত্তর সবসময় ২
এই জাদুটি আপনার কোনো বন্ধুদের দেখাতে পারেন। আপনি বন্ধুকে কিছু যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করতে বলবেন, আর উত্তর হবে সব সময় ২। নিচের নিয়মানুসারে বন্ধুকে ধাপে ধাপে কাজগুলো করতে বলুন।
ক) যে কোনো একটি সংখ্যা কল্পনা করতে হবে
খ) ওই সংখ্যার সঙ্গে গুণ করতে হবে ৩
গ) গুণফলের সঙ্গে যোগ করতে হবে ৬
ঘ) এবার যোগফলকে ভাগ করতে হবে ৩ দিয়ে
ঙ) প্রথমে যে সংখ্যাটি কল্পনা করেছিল, তা বিয়োগ করতে বলুন।
ব্যস, উত্তর হবে ২।
চলুন এবার দেখা যাক, আসলেই উত্তর ২ হয় কি না। একটি সংখ্যা ধরলাম ৫। এরসঙ্গে ৩ গুণ করলে হবে ১৫। এরপর ১৫-এর সঙ্গে ৬ যোগ করলে হবে ২১। এবার ৩ দিয়ে ভাগ করলে হবে ৭। সর্বশেষ ভাগফল থেকে প্রথমে কল্পনা করা ৫ বিয়োগ করলে হবে ২।
তবে একই বন্ধুর সঙ্গে বারবার এই জাদু দেখালে, সে বুঝে যাবে উত্তর সব সময় ২ হয়। এতে আপনার কেরামতি বুঝে ফেলতে পারে। তাই একজন বন্ধুকে একবারের বেশি এ জাদু দেখাতে যাবেন না। ধরা পরে যাবেন।
৩. তিন অঙ্কের জাদু
এটাও ওপরের জাদুর মতোই। তিনটি ধাপে জাদুটি দেখাতে পারবেন।
ক) একই অঙ্কের তিনটি নিতে হবে। যেমন, ৩৩৩ বা ৭৭৭ অথবা ৫৫৫
খ) যে তিনটি অঙ্ক নিবেন, সেগুলোর যোগ করতে হবে। যেমন ৩৩৩ নিলে এদের যোগফল হবে ৩ + ৩ + ৩ = ৯
গ) এবার যে তিনটি সংখ্যাকে নিয়েছেন তাকে ওই তিন সংখ্যার যোগফল দিয়ে ভাগ করতে হবে।
এবার উত্তর হবে ৩৭। এটাও একটু খাতা কলমে প্রমাণ করে দেখা যাক।
প্রথমে তিন অঙ্কের একটি সংখ্যা নিলাম ৬৬৬। এদের যোগফল ১৮। এবার ৬৬৬ ÷ ১৮ = ৩৭। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। এটার উত্তরও সবসময় হয় ৩৭।
৪. ছয় অঙ্কের জাদু
এই গাণিতিক জাদুর শর্তগুলো দেখুন।
ক) তিন অঙ্কের যেকোনো একটি সংখ্যা নিন। সংখ্যাটি পরপর দুইবার লিখতে হবে। যেমন, তিন অঙ্কের সংখ্যাটি নিলাম ৩৭১। পরপর দুইবার লিখলে হবে ৩৭১৩৭১।
খ) ওপরের সংখ্যাটিকে ৭ দিয়ে ভাগ করতে হবে।
গ) ভাগফলকে আবার ভাগ করতে হবে ১১ দিয়ে।
ঘ) এরপর আরও একবার ভাগফলকে ১৩ দিয়ে ভাগ করতে হবে।
ভাগের কাজ শেষ হলে দেখবেন আপনার কল্পনা করা প্রথম সংখ্যাটাই উত্তর।
চলুন একটু মিলিয়ে দেখি। একটি সংখ্যা কল্পনা করলাম ১২৩। তাহলে পরপর দুইবার সাজিয়ে লিখলে পাবো ১২৩১২৩। এবার এই সংখ্যাটিকে ভাগ করবো ৭ দিয়ে। ১২৩১২৩ ÷ ৭ = ১৭৫৮৯। এই ভাগফলকে ১১ দিয়ে ভাগ করলে হবে ১৭৫৮৯ ÷ ১১ = ১৫৯৯। আবার এই ভাগফলকে ১৩ দিয়ে ভাগ করলে হবে হবে ১৫৯৯ ÷ ১৩ = ১২৩। তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রথম কল্পনা করা সংখ্যা এবং উত্তর আসলে একই।
এই একই পদ্ধতি আপনি উল্টোভাবেও করতে পারেন। মানে ভাগ না করে গুণ করতে পারেন। তিন অঙ্কের যেকোনো একটি সংখ্যা নিয়ে সেই সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে ৭, ১১ ও ১৩ দিয়ে গুণ করতে হবে। তাহলে দেখবেন যে সংখ্যাটি আপনি কল্পনা করেছেন, তা পরপর দুই হয়েছে। যেমন, একটি সংখ্যা কল্পনা করি ৪৫৬। একে প্রথমে ৭ দিয়ে গুণ করলে হবে ৪৫৬ × ৭ = ৩১৯২। এবার গুণফলকে গুণ করতে হবে ১১ দিয়ে। অর্থাৎ, ৩১৯২ × ১১ = ৩৫১১২। আর এই গুণফলকে আবার ১৩ দিয়ে গুণ করলে হবে ৩৫১১২ × ১৩ = ৪৫৬৪৫৬। দারুণ না ব্যাপারটা!
৫. ১১-এর গুণের জাদু
১১ দিয়ে খুব সহজে গুণ করার একটা কৌশল আছে। চোখের নিমেষেই উত্তর হয়ে যায়। তিনটি ছোট নিয়ম মানতে হবে।
ক) ১১ দিয়ে যে সংখ্যাটি গুণ করবেন, তা সর্বোচ্চ দুই অঙ্কের হতে হবে। মানে ৯৯-এর বড় সংখ্যাকে ১১ দিয়ে এ পদ্ধতিতে গুণ করা যাবে না।
খ) সংখ্যার অঙ্ক দুটিকে যোগ করতে হবে
গ) এরপর বসিয়ে দিতে অঙ্ক দুটির মাঝে।
ব্যস। উত্তর হয়ে গেছে। চলুন একটি মিলিয়ে দেখি। ধরুন, ৭২ × ১১ = ৭৯২। মানে ৭২-এর মাঝে ৭ ও ২-এর যোগফল (৭ + ২ = ৯) বসিয়ে দিলে উত্তর পাওয়া যাবে। আরেকটা গুণ দেখুন। ৪৩ ও ১১ গুণ করতে হবে। খুব সহজে উত্তর বলে দিতে পারেন ৪৭৩। কারণ ৪ + ৩ = ৭। সুতরাং, ৪৩-এর মধ্যে ৭ বসিয়ে উত্তর পেলাম ৪৭৩।
তবে অঙ্ক দুটির যোগফল যদি ১০-এর বেশি হয় তাহলে কী করবেন? যেমন ৫৭ × ১১ = কত? এখানে ৫ + ৭ = ১২। নিশ্চয় ৫১২৭ গুণফল হবে না। এক্ষেত্রে যোগফল ১২-এর শুধু ২ রাখতে হবে মাঝে। আর ১ যোগ করে দিতে হবে আগের সংখ্যার সঙ্গে। মানে উত্তর হবে ৬২৭।
লেখক: সদস্য, সম্পাদনা দল, বিজ্ঞানচিন্তা
সূত্র: থটকো ডট কম অবলম্বনে