এমন একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যিনি ১৯৬৫ সালে নিজের একটি ৪ চাকার গাড়ি ক্রয় করতে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে মাত্র ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, জীবদ্দশায় সেই ঋণের একটি কিস্তিও উনি জমা করতে পারেননি ।
১৯৬৬ সালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষ উনার বাড়িতে নোটিশ পাঠান। নোটিশ পেয়ে উনার স্ত্রী নিজের পেনশনের টাকা থেকে ওই ঋণের সকল কিস্তি জমা করেন। যার কথা বলছি উনি আর কেউ নন, উনি লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। উনার সহধর্মিণী ললিতা শাস্ত্রীও ঠিক উনারই মতো সৎ স্বভাবী ছিলেন এবং সারা জীবন একজন প্রকৃত জীবনসঙ্গীর মতোই পাশে ছিলেন।
শাস্ত্রীর ওই ৪ চাকার গাড়িটি আজও রয়েছে জনপথের আবাসে (বর্তমানে সংগ্রহশালা)! এবার এখানে একটু থামুন, আর ভাবুন কিছু এমন লোকের কথা যারা ব্যাঙ্ক এর ঋণের কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা।
এমন আর একটি ঘটনার কথা আজ বলা খুব দরকার।
১৯৬২ সালের কথা, সেসময় শাস্ত্রীজি অখিল ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির মহাসচিব। তখন প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরু। উনার কোনো এক কাজের দরুন কাশ্মীর যাওয়ার দরকার ছিল। নেহরু উনাকে কাশ্মীর যেতে লাগাতার অনুরোধ করলেও তিনি বার বার যেতে অস্বীকার করেন। পণ্ডিত নেহরুও হতচকিত হন। কেন উনি যেতে রাজী হচ্ছেন না। রীতিমত অবাক হন পণ্ডিত নেহরু। পণ্ডিত নেহরু কিন্তু উনাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভালবাসতেন। তখন নেহরু উনাকে কাশ্মীর না যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। প্রথমে তো উত্তর দিতেই নারাজ। শুধু একটাই কথা আমি যাবো না। কিন্তু বহু বার অনুরোধ করার পর উনি যে উত্তর দিলেন তাতে নেহরুর চোখে জল চলে এসে যায়। শাস্ত্রী বললেন, কাশ্মীরে খুব ঠাণ্ডা পড়ছে। আর তার কাছে গরম পোষাক-আশাক নেই।
পণ্ডিত নেহরু অত্যন্ত ভাবুক হয়ে পড়েন এবং নিজের একখানা গরম বস্ত্র উনাকে দেন। পণ্ডিত নেহরুও এই কথাটি আর কাউকে বলেননি। এই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন সেদিনের নেহরুর দেওয়া ওই কোটটি পরিধান করেই শপথ নেন। এই একটি কোট দুই প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করেছিলেন।
No comments:
Post a Comment