Gulliver’s Travels by Jonathan Swift
গালিভারের ট্রাভেলস (Gulliver’s Travels) কাহিনী :
লেখক: জোনাথন সুইফ্ট (Jonathan Swift)
প্রকাশকাল: ১৭২৬
**বইটি মোট চারটি অংশে বিভক্ত, এবং প্রতিটি অংশে গালিভারের এক একটি ভিন্ন দেশে ভ্রমণের বর্ণনা আছে। এই কাহিনীগুলোর মাধ্যমে লেখক মানুষের অহংকার, রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা এবং জ্ঞানগরিমাকে ব্যঙ্গ করেছেন।
প্রথম ভাগ: লিলিপুট দেশে ভ্রমণ (Voyage to Lilliput)
গালিভার একটি জাহাজের চিকিৎসক ছিলেন। একসময় ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজ ডুবে যায় এবং তিনি সাঁতরে একটি অজানা দ্বীপে পৌঁছান। সেখানে তিনি আবিষ্কার করেন, দ্বীপটি "লিলিপুট" নামে পরিচিত এবং সেখানকার সব মানুষ মাত্র ছয় ইঞ্চি লম্বা।
এই দেশে গালিভার যা দেখেন:
ছোট ছোট মানুষ গালিভারকে প্রথমে বন্দি করে।
পরে তার দানবীয় আকার দেখে ভয় পেলেও, ধীরে ধীরে তাকে বিশ্বাস করে ও সাহায্য নেয়।
রাজনীতি, যুদ্ধ, ধর্ম এবং আদালতের নানা ব্যঙ্গাত্মক দিক তিনি দেখেন।
লিলিপুট এবং তাদের শত্রু দেশ ব্লেফাস্কুর মধ্যে ডিম ফাটানো নিয়ে যুদ্ধ লেগে যায়।
শেষ পর্যন্ত গালিভারকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
তিনি পালিয়ে ব্লেফাস্কুতে যান এবং সেখান থেকে দেশে ফিরে আসেন।
দ্বিতীয় ভাগ: ব্রোবডিন্যাগ দেশে ভ্রমণ (Voyage to Brobdingnag)
গালিভার আবার এক অভিযানে বের হন এবং এবার এক বিশালদেহী জাতির দেশে (Brobdingnag) গিয়ে পৌঁছান। এখানে সবাই গালিভারের তুলনায় অনেক বিশাল আকারের।
এই দেশে গালিভার যা দেখেন:
এক কৃষক গালিভারকে খাঁচায় পুরে সার্কাসে দেখায়।
পরে রানীর হাতে গালিভার যায় এবং রাজপ্রাসাদে থাকে।
বিশাল মানুষের চোখে গালিভার কেবল একটি খেলনা।
রাজা ইউরোপীয় রাজনীতি ও যুদ্ধ সম্পর্কে শুনে ঘৃণা প্রকাশ করেন।
এক বিশাল ঈঁদুর তাকে আক্রমণ করলে গালিভার নিজের অস্ত্র দিয়ে তাকে মেরে ফেলে।
শেষ পর্যন্ত একটি পাখি তাকে তুলে সমুদ্রে ফেলে দেয় এবং সেখান থেকে তিনি উদ্ধার হন।
তৃতীয় ভাগ: ল্যাপুটা ও অন্যান্য দেশে ভ্রমণ (Voyage to Laputa, Balnibarbi, Glubbdubdrib, Luggnagg, and Japan)
এই অংশে গালিভার বেশ কয়েকটি অদ্ভুত দেশে ভ্রমণ করেন।
🔸 ল্যাপুটা:
এটি একটি ভাসমান দ্বীপ যেখানে বিজ্ঞানীরা বাস করে।
তারা সব সময় গণিতে মগ্ন এবং বাস্তব জগৎ সম্পর্কে উদাসীন।
🔸 বালনিবারবি:
বিজ্ঞানীরা ব্যর্থ গবেষণায় মগ্ন। বাস্তবিক কোনো উন্নতি নেই।
🔸 গ্লাবডুবড্রিব:
এখানে জাদুবিদ্যার মাধ্যমে মৃতদের আত্মাকে ডাকা যায়।
গালিভার প্রাচীন ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেন যেমন আলেকজান্ডার, সিজার ইত্যাদি।
🔸 লুগ্ন্যাগ:
সেখানে এমন কিছু মানুষ আছে যারা কখনোই মরেন না (Struldbrugs), কিন্তু বার্ধক্য ও দুঃখে ভরা জীবন কাটায়।
🔸 জাপান:
এখান থেকে তিনি দেশে ফেরেন।
চতুর্থ ভাগ: হুইনহিমস ও ইয়াহুদের দেশে ভ্রমণ (Voyage to the Country of the Houyhnhnms)
গালিভার শেষবারের মতো এক দেশে পৌঁছান যেখানে হুইনহিমস (Houyhnhnms) নামে ঘোড়ার মতো প্রাণীরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং সভ্য।
এখানে গালিভার যা দেখেন:
হুইনহিমসেরা যুক্তিবাদী ও শান্তিপূর্ণ জাতি।
এখানে "ইয়াহু" (Yahoo) নামে এক ধরনের পশুর মতো মানুষ বাস করে – নোংরা, হিংস্র ও লোভী।
হুইনহিমরা বিশ্বাস করে গালিভারও ইয়াহুদের মতো, যদিও সে একটু ভদ্র।
গালিভার হুইনহিমদের সমাজ দেখে এতটাই মুগ্ধ হন যে, মানুষের সমাজকে ঘৃণা করতে শুরু করেন।
শেষ পর্যন্ত হুইনহিমরা তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়।
তিনি দেশে ফিরে আসেন কিন্তু মানুষের সঙ্গে আর মিল মেলাতে পারেন না এবং ঘোড়ার সঙ্গেই সময় কাটান।
উপসংহার:
গালিভারের ট্রাভেলস একটি কালজয়ী ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্যকর্ম। প্রতিটি যাত্রার মধ্যে দিয়ে লেখক সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম, বিজ্ঞান ও মানুষের স্বভাবকে ব্যঙ্গ করেছেন।
গালিভারের চরিত্রের পরিবর্তন এবং তার উপলব্ধি আমাদেরকে নিজের সমাজের দিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
নিচে Jonathan Swift-এর Gulliver’s Travels বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (quotations) ও সেগুলোর বাংলা অনুবাদ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
Part 1: Voyage to Lilliput
1. “He seemed to think that I was not only a large animal but a prodigious genius.”
বাংলা অনুবাদ: সে মনে করল আমি শুধু বিশালদেহী প্রাণীই নই, বরং এক অসাধারণ প্রতিভাও।
ব্যাখ্যা: লিলিপুটের ছোট মানুষদের চোখে গালিভারের আকৃতি ও বুদ্ধি অতিমানবীয় বলে মনে হয়।
2. “Difference in opinions has cost many millions of lives.”
বাংলা অনুবাদ: মতপার্থক্যের কারণে বহু কোটি প্রাণ ঝরে গেছে।
ব্যাখ্যা: এখানে লেখক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতভেদ থেকে সৃষ্টি যুদ্ধ ও বিভেদের সমালোচনা করেছেন।
3. “Whoever could make two ears of corn, or two blades of grass, to grow upon a spot of ground... deserves better of mankind.”
বাংলা অনুবাদ: যে ব্যক্তি একই জমিতে দুটি শস্যগাছ বা ঘাসগাছ জন্মাতে পারে, সে মানবজাতির প্রতি রাজনীতিবিদের চেয়ে বেশি অবদান রাখে।
ব্যাখ্যা: লেখক বাস্তব উন্নয়নকেই সবচেয়ে বড় অবদান হিসেবে তুলে ধরেছেন।
Part 2: Voyage to Brobdingnag
4. “The King was struck with horror at the description I gave of our armies.”
বাংলা অনুবাদ: রাজা আমার দেশের সেনাবাহিনীর বর্ণনা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন।
ব্যাখ্যা: ব্রোবডিন্যাগের রাজা ইউরোপীয় সামরিক ব্যবস্থাকে অমানবিক মনে করেন।
5. “I cannot but conclude the bulk of your natives to be the most pernicious race of little odious vermin.”
বাংলা অনুবাদ: আমি মনে করি, তোমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই ক্ষতিকর ও ঘৃণ্য জাতির অন্তর্গত।
ব্যাখ্যা: ব্রোবডিন্যাগের দৃষ্টিতে ইউরোপীয়দের লোভ ও যুদ্ধপ্রবণতা নিন্দনীয়।
6. “Ignorance, idleness, and vice are the proper ingredients for qualifying a legislator.”
বাংলা অনুবাদ: অজ্ঞতা, অলসতা ও দুর্নীতি—এই তিনটি গুণই একজন আইনপ্রণেতার জন্য যথার্থ।
ব্যাখ্যা: এটি সুইফ্টের রাজনৈতিক ব্যঙ্গ, যেখানে তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতির সমালোচনা করেন।
Part 3: Voyage to Laputa and other places
7. “They are never able to apply their knowledge to practical use.”
বাংলা অনুবাদ: তারা কখনোই তাদের জ্ঞানকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে না।
ব্যাখ্যা: ল্যাপুটার বিজ্ঞানীরা অবাস্তব চিন্তায় ডুবে থাকায় সমাজে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে না।
8. “The more ignorant a man is, the more forward he is to write.”
বাংলা অনুবাদ: একজন মানুষ যত বেশি অজ্ঞ, সে তত বেশি লেখালিখিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
ব্যাখ্যা: লেখক কটাক্ষ করেছেন সেইসব লেখকের প্রতি যারা গাঁজাখুরি ও অপ্রাসঙ্গিক কথা লেখেন।
9. “Nothing is great or little otherwise than by comparison.”
বাংলা অনুবাদ: কিছুই আসলে বড় বা ছোট নয়—সবকিছু তুলনার উপর নির্ভর করে।
ব্যাখ্যা: গালিভার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে উপলব্ধি করেন, সবকিছু আপেক্ষিক।
Part 4: Voyage to the Country of the Houyhnhnms
10. “I had never once heard a lie, and consequently, could not be sure whether this was one.”
বাংলা অনুবাদ: আমি কখনোই মিথ্যা কথা শুনিনি, তাই বুঝতেই পারছিলাম না এটা মিথ্যা কি না।
ব্যাখ্যা: হুইনহিমদের সমাজ এতটাই সততার ওপর প্রতিষ্ঠিত যে মিথ্যার ধারণাই সেখানে অনুপস্থিত।
11. “Reason is what distinguishes us from the brutes.”
বাংলা অনুবাদ: যুক্তিবোধই আমাদের পশুদের থেকে আলাদা করে।
ব্যাখ্যা: লেখক মানুষের মধ্যে যুক্তির ব্যবহার কমে যাওয়ায় পশুর মতো আচরণের ইঙ্গিত দেন।
12. “The Yahoos were the most filthy, noisome, and deformed animals.”
বাংলা অনুবাদ: ইয়াহুরা ছিল সবচেয়ে নোংরা, কুৎসিত ও বিকৃত প্রাণী।
ব্যাখ্যা: ইয়াহুরা ছিল মানুষজাতির রূপক, যাদের লোভ, হিংসা ও কুপ্রবৃত্তির প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।
13. “I could with great ease persuade the Houyhnhnms that I was a Yahoo.”
বাংলা অনুবাদ: আমি খুব সহজেই হুইনহিমদের বোঝাতে পারলাম যে, আমি একজন ইয়াহু।
ব্যাখ্যা: মানুষের পশুত্বের প্রতি গালিভারের হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে।
14. “When I reflect on the past, I cannot deny that I was once a Yahoo.”
বাংলা অনুবাদ: অতীতের কথা ভাবলে আমি অস্বীকার করতে পারি না যে আমিও একসময় ইয়াহু ছিলাম।
ব্যাখ্যা: গালিভার নিজের ভেতরের পশুপ্রবৃত্তিকে স্বীকার করেন।
15. “I said this was a truth, which I ventured to own.”
বাংলা অনুবাদ: আমি বললাম এটি একটি সত্য, যা স্বীকার করার সাহস দেখালাম।
ব্যাখ্যা: গালিভার সত্যকে সাহসের সঙ্গে মেনে নিতে শেখেন, যা তার চরিত্রগত পরিবর্তনের প্রতীক।
Comments
Post a Comment