Friday, January 13, 2023

জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এর আলোকে ১০ টি মুল যোগ্যতা ও বিবেচ্য বিষয় সমুহ

নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা যেকোনও ইস্যুতে সূক্ষ্ম চিন্তা করার শক্তি অর্জন করবে। আর অন্যের মতামত ও অবস্থানকে অনুধাবন করে প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নিজের ভাব, মতামত সৃজনশীলভাবে প্রকাশ করতে পারার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। ১০টি যোগ্যতা অর্জনের নতুন মাত্রা সংযোজন করা হয়েছে অনুমোদিত নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায়। শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক ও আনন্দময় শিখনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে নতুন শিক্ষাক্রমে বিবেচ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয় এবং পাঠ্যবইয়ের বোঝা ও চাপ কমানো এবং গভীর শিখনের বিষয়েও গুরুত্ব বিবেচনা করা হয়েছে।

২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হতে যাওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা গত সোমবার (৩০ মে) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় অনুমোদন দেওয়া হয় রূপরেখাটির।

এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন শিক্ষাক্রমে বিবেচ্য বিষয়

১. শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক ও আনন্দময় শিখনের পরিবেশ সৃষ্টি

২. বিষয় এবং পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো

৩. গভীর শিখনের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান

৪. মুখস্থ নির্ভরতার পরিবর্তে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে অগ্রাধিকার প্রদান

৫. খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে গুরুত্ব প্রদান

৬. নির্দিষ্ট দিনের পাঠ শ্রেণিকক্ষেই যেন শেষ হয় সে ধরনের শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনায় সচেষ্ট হয়ে বাড়ির কাজ কমানো

৭.নির্দিষ্ট সময়ে অর্জিত পারদর্শিতার জন্য সনদপ্রাপ্তির প্রতি গুরুত্ব আরোপ

৮. জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কিত শিক্ষা

নতুন শিক্ষাক্রমে  ১০ টি মূল যোগ্যতা

১. অন্যের মতামত ও অবস্থানকে সম্মান ও অনুধাবন করে, প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নিজের ভাব, মতামত যথাযথ মাধ্যমে সৃজনশীলভাবে প্রকাশ করতে পারা।

২. যেকোনও ইস্যুতে সূক্ষ্ম চিন্তার মাধ্যমে সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে সকলের জন্য যৌক্তিক ও সর্বোচ্চ কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিতে পারা।

৩. ভিন্নতা ও বৈচিত্র্যকে সম্মান করে নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক হয়ে নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শনপূর্বক বিশ্ব নাগরিকের যোগ্যতা অর্জন করা।

৪. সমস্যা দ্রুত অনুধাবন, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ এবং ভবিষ্যৎ তাৎপর্য বিবেচনা করে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে যৌক্তিক ও সর্বোচ্চ কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিতে ও সমাধান করতে পারা।

৫. পারস্পরিক সহযোগিতা, সম্মান ও সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাসযোগ্য পৃথিবী তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারা।

৬. নতুন দৃষ্টিকোণ, ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগের মাধ্যমে নতুনপথ, কৌশল ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করে শৈল্পিকভাবে তা উপস্থাপন এবং জাতীয় ও বিশ্বকল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারা।

৭. নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়ে নিজ অবস্থান ও ভূমিকা জেনে ঝুঁকিহীন নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং বৈশ্বিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ তৈরি করতে ও বজায় রাখতে পারা।

৮. প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে ঝুঁকি মোকাবিলা এবং মানবিক মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে নিরাপদ ও সুরক্ষিত জীবন ও জীবিকার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে পারা।

৯. পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে দৈনন্দিন উদ্ভূত সমস্যা গাণিতিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা ব্যবহার করে সমাধান করতে পারা।

১০. ধর্মীয় অনুশাসন, সততা ও নৈতিক গুণাবলি অর্জন এবং শুদ্ধাচার অনুশীলনের মাধ্যমে প্রকৃতি ও মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারা।

No comments:

Post a Comment