Sunday, October 22, 2023

বর্তমান শিক্ষানীতির এপিট ওপিট

বর্তমান শিক্ষানীতি কি সঠিক? কে করছে বিরোধীতা? কেন করছে?
শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবার মধ্যে এই প্রশ্ন। কথা হলো এই শিক্ষানীতি নিয়ে এতো কথা কেন? শুধু রান্না নিয়ে এতো কথা কেন? অন্যান্য ভালো দিকগুলো আলোচনা হচ্ছে না কেন?
১। যারা সমালোচনা করেন তারা কি ব‌ইগুলো পড়ে দেখেছেন? 
- আমারতো মনে হয় ভালোভাবে কেউ ব‌ইগুলো খুলেই দেখেনি। যারা পড়েছেন তারা বুঝতে চেষ্টা করেননি। আবার কেউ কেউ ছেলেমেয়েদের কথা শুনে,কেউ কেউ প্রতিবেশীর কথা শুনে আবার কেউবা শুধু ফেসবুকে সমালোচনা হচ্ছে দেখে সমালোচনা করছেন।
২। তাহলে কি সরকার বিরোধীরা সমালোচনা করছেন?
- উত্তরে বলবো সবাই সরকার বিরোধী না, কারণ এখানে কোচিং সেন্টারের সদস্য আছে, গাইড বইয়ের সদস্য আছে, প্রাইভেট শিক্ষক আছে এবং কিছু সরকার বিরোধীরাও আছে।
৩। সব ব‌ইয়ে কি রান্না-বান্না আছে?
- না,সব বিষয়ে রান্না করার আলোচনা নেই। একটি ক্লাসে দশটি  ব‌ইয়ের মধ্যে জীবন জীবিকা নামে মাত্র একটি বইয়ে ১১ টি অধ্যায়ের মধ্যে একটি অধ্যায় কুকিং। হিসেব করলে একটি ক্লাসে মোট অধ্যায়ের ১২১ ভাগের এক ভাগ কুকিং অথচ সমালোচনাকারীরা এটা নিয়েই মাতামাতি করছে।
৪। কোন কোন স্কুলে যে প্রতি মাসেই রান্না করে ছবি আপলোড করছে? আবার কোন কোন স্কুলে নিয়মিত বাড়ি থেকে রান্না করে আনতে বলছে। এটা কেন?
- আমি বলবো নতুন কারিকুলাম এখনো সব শিক্ষক বুঝে উঠতে পারেননি। তাছাড়া নতুন কারিকুলাম সবে শুরু,বুঝে উঠতে একটু সময় লাগবে। ফেসবুকে আপলোড করে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে অথবা শিক্ষক মনে করেন এক স্কুলে আপলোড করেছে আমি না করলে শিক্ষা অফিসার,অন্য স্কুল,অন্য শিক্ষক মনে করবেন আমরা এগুলো করছিনা, এজন্য দেখাদেখি ছবি আপলোড করছে এবং সেগুলোই সমালোচনাকারীরা লুফে নিচ্ছে।
৪। ভালো বিষয়গুলো ভাইরাল হচ্ছে না কেন?
- ভালো জিনিসের কদর কম,আগ্রহ কম, তাছাড়া এগুলো প্রচার করে তো সমালোচনাকারীদের লাভ নেই বরং ক্ষতি। তাদের গাইড ব্যবসা বন্ধ, তাদের কোচিং বন্ধ, তাদের প্রাইভেট বন্ধ। আপনি ভাবুন তো সমালোচনা হবে না কেন।
৫। এই কারিকুলামের সুবিধা কি?
- আগে সব বিমূর্ত ধারণা ছিল কিন্তু এখন সব বাস্তবধর্মী। অতীতে শিক্ষার্থীরা পিথাগোরাসের সূত্র মুখস্থ করেছে কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার্থীরা তা কাগজ কেটে প্রমাণ করছে। আগে শিক্ষার্থীরা রোবট দেখে নাই, বর্তমানে শিক্ষার্থীরা রোবট তৈরিতে চেষ্টা করছে। বীজগণিতের মিডিল ফেক্টর মুখস্থ করেছে কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার্থীরা কাগজ কেটে প্রমাণ করছে। আগে শিক্ষার্থীরা একবীজপত্রী-দ্বীবীজপত্রী উদ্ভিদের নাম মুখস্থ করেছে বর্তমান কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা খুঁজে খুঁজে একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ বের করছে। আগে শিক্ষার্থীরা ১০০ ইংরেজী রচনা মুখস্থ করেছে কিন্তু কারো মনে নেই , বর্তমানে সেগুলো লাগে না। আগে শিক্ষার্থীরা কৃষি কাজের কথা শুধু ব‌ইয়ে পড়েছে কিন্তু বর্তমানে মাঠে নামছে এবং বাস্তবে বাস্তবায়ন করতে শিখছে। এক কথায় সবকিছু বাস্তবে দেখে,করে শিখছে যা আগে ছিলো না।
৬। এই কারিকুলামের অসুবিধা কি কি?
- অধিক শিক্ষার্থী অর্থাৎ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত হবে ১:৩০, শিক্ষকদের ট্রেনিং স্বল্পতা(বছরে মাত্র একটি ট্রেনিং তাও সবাই পায়নি), শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিসাররদের নিষ্ক্রিয়তা, সরকারের প্রচারণার অভাব, মাস্টার ট্রেইনারদের মুল্যায়নের অভাব( তাদের যথাযথ ব্যবহার করলে অনেকাংশে সুবিধা আসতো)।
সর্বশেষ বলবো নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিসাররদের সক্রিয় হয়ে মাস্টার ট্রেইনারদের মুল্যায়নের মাধ্যমে তাদের যথাযথ ব্যবহারের করতে হবে। শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিসাররদের সক্রিয় করতে তাদের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। তাহলে এই কারিকুলামের সুবিধা দৃশ্যমান হবে সবার কাছে।
(কালেক্টেড)

No comments:

Post a Comment