সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সীমানায় থাকলেও এর ৬৬% অর্থাৎ প্রায় ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটারের এই বনের ৬৫১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত। আমাদের বড় দেশের বড় একটা জনগোষ্ঠী সুন্দরবনের মধু আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সেই সুন্দরবনের মধুর জি আই স্বীকৃতি পেল বা নিল ভারত। একইভাবে টাংগাইলের শাড়ি তাদের বলে দাবী করলে বাংলাদেশের জনগণের আপত্তির মুখে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
অথচ সুন্দরবন নিয়ে কথা বলার লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!!! এই দায়িত্ব কে নিবে? আমাদের সকল মধুওয়ালাদেরও এখনি সোচ্চার হতে হবে, দাবী জানাতে হবে। এটি আমাদের অধিকার।
জিআই সনদ পেলে আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে সুবিধা হয়। সনদ পেলে রপ্তানিতে সুবিধা পাওয়া যায়। বিদেশিরা জানবে পণ্যটি বাংলাদেশের ওই নির্দিষ্ট এলাকার।
কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই বা ভোগৌলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কোনো একটি পণ্য চেনার জন্য জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো পণ্যের বিস্তারিত না জানলেও খ্যাতির ওপর নির্ভর করেই সেই পণ্যটি ব্যবহার করতে পারেন ভোক্তারা।
জিআই সনদ দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)।সরকার ২০১৩ সালে জিআই সনদ আইন পাস করে। আর বিধিমালা প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। এই বিধিমালার সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডাব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে জিআই সনদ দেয় ডিপিডিটি।
কৃষি, হস্তশিল্প ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন—এই তিন ধরনের পণ্যকে জিআই সনদ বা মর্যাদা দেওয়া হয়। এ জন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংগঠনকে তথ্য-উপাত্তসহ ডিপিডিটির কাছে আবেদন করতে হয়। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রারের অনুমোদন পেলে জার্নালে প্রকাশ করা হয়। পরে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। দুই মাসের মধ্যে কেউ যদি এই পণ্য নিয়ে আপত্তি না তোলে তাহলে সনদ দেওয়া হয়। এর পরই কেবল দেশের মধ্যে একক মর্যাদাসম্পন্ন পণ্য হিসেবে গণ্য করা হয়।
No comments:
Post a Comment