Wednesday, January 15, 2025

হার জিত

-: ১ :-
বিধবা বিবাহের পক্ষে সই ছিল মাত্র ৯৮৭টি, আর বিপক্ষে সই ছিল ৩৬,৭৬৩টি।

বাকিটা ইতিহাস।

-: ২ :-
গ্যালিলিও কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যেদিন বলেছিলেন, "আমি আবার বলছি, সূর্য স্থির। পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে। আমাকে শাস্তি দিয়েও, সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর প্রদক্ষিণ আপনারা বন্ধ করতে পারবেন না, পৃথিবী আগের মতোই ঘুরবে।" সেদিন ওনার কথায় সবাই হেসেছিলো। বিচার সভায় গ্যালিলিও-র শাস্তি হয়েছিল।

বাকিটা ইতিহাস।

-: ৩ :-
সতীদাহ প্রথার মতো জঘন্য এক সামাজিক প্রথার বিরুদ্ধে যেদিন রাজা রামমোহন রায় রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, সেদিন সমাজের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ ওনাকে হাস্যাস্পদ করেছিল।

বাকিটা ইতিহাস।

-: ৪ :-
সিগনেট থেকে প্রকাশিত বিভূতিভূষণের "পথের পাঁচালী"-র সংক্ষিপ্ত সংস্করণ "আম আঁটির ভেঁপু"-র জন্য ছবি আঁকতে আঁকতেই সত্যজিতের মনে হয়েছিল, তিনি যদি কোনোদিন সিনেমা করেন, তবে এটাই হবে তাঁর প্রথম সিনেমা। সিনেমার শুটিং যখন শুরু হয়, তখন শুধু প্রযোজকরাই নন, তৎকালীন বিখ্যাত পরিচালকরাও তাঁর উপর হেসেছিলেন। অনেকে তো ওনাকে পাগল পর্যন্ত বলেছিলেন। 

বাকিটা ইতিহাস।

-: ৫ :-

আমরা যখন বলি - লড়াইটা উগ্র দেশপ্রেম আর মানুষে মানুষে বিভেদ নিয়ে নয়, লড়াইটা খাদ্য বাসস্থান শিক্ষা স্বাস্থ্য নিয়ে; লড়াইটা রোজ সন্ধ্যার ওই টিভি স্টুডিওর টিকি আর দাড়ির জন্য নয়, লড়াইটা স্বাধীনতা গণতন্ত্র আর সঠিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য - ওরা হাসে আমাদের উপর। 

আমরা যখন বলি - নারীর পিরিয়ড হওয়া মানে তার শরীর অপবিত্র ঘোষণা করে দিয়ে বিভিন্ন জায়গাতে তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া নয় - তখনও ওরা হাসে আমাদের উপর। 

ওদের হাসতে দিন। শুধু একটা কথাই মনে রেখে দিন -    হাজারটা লোকও যদি একটা পুকুরকে সমুদ্র বলে, রাতারাতি পুকুরটা সমুদ্র হয়ে যায় না।

তাই প্রশ্ন এটা নয় যে আমরা পরিসংখ্যানে কত শতাংশ? প্রশ্ন এটাও নয় যে আমরা নগণ্য!

উত্তর একটাই:
আজ থেকে অনেকগুলো বছর পর কারখানার খেটে খাওয়া ওই শ্রমিকগুলো, অথবা স্কুল কলেজে পড়া ওই ছেলে মেয়েগুলো, মাঠের ধারে ওই বেঞ্চটাতে বসে যখন গল্প করবে, ওরা বলবে,

"জানিস, আজ থেকে অনেকগুলো বছর আগে সবাই যখন গনতন্ত্রের নেশাতে মানুষকে মাতিয়ে রেখেছিলো, আমাদের মত খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য ওই ওরাই ঠিক আওয়াজ তুলেছিল"।

পৃথিবীর সব যুদ্ধ জেতা যায় না, কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে থাকতে হয় - এটা বোঝানোর জন্য কেউ তো একজন ছিল, কেউ তো একজন শুরু করেছিল, কেউ তো একজন শাসকের চোখে চোখ রেখে বলতে পেরেছিলো।

রাজা তোর কাপড় কোথায়?
 
জেতা হারাটা‌ তো সাময়িক, জীবনে নীতিটাই সব।
#collected

কাফকার পুতুলের প্রতি ভালবাসার কাহিনি

ভালোবাসা কি জানেন? 🥰
ফ্রান্ৎস কাফকা (Franz Kafka) কখনও বিয়ে করেননি এবং তার কোনো সন্তানাদিও ছিল না। তার বয়স যখন ৪০, তখন একদিন তিনি বার্লিনের পার্কে হাঁটছিলেন। এমন সময় তিনি একটি ছোট্ট মেয়েকে দেখলেন যে তার প্রিয় পুতুলটি হারিয়ে কাঁদছিল। সেই মেয়েটি এবং কাফকা, দু’জনে মিলে খুব খুঁজলেন হারিয়ে যাওয়া পুতুলটিকে। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না তা।

কাফকা মেয়েটিকে পরের দিন আবার সেখানে আসতে বললেন। উদ্দেশ্য, আবার তারা দু’জনে মিলে হারিয়ে যাওয়া পুতুলটি খুঁজবেন সেখানে।

কিন্তু পরের দিনও পুতুলটিকে খুঁজে পাওয়া গেল না। তখন কাফকা ছোট্ট মেয়েটিকে একটি চিঠি দিলেন। আর বললেন, ‘এই চিঠিটি তোমার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের লেখা’। সে চিঠিতে লেখা ছিল, ‘দয়া করে তুমি কেঁদো না। আমি পৃথিবী দেখতে বেরিয়েছি। আমি আমার রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনী তোমাকে নিয়মিত লিখে জানাব।’

এভাবেই শুরু হয়েছিল একটি গল্পের, যা চলেছিল কাফকার মৃত্যু পর্যন্ত।

ছোট্ট মেয়েটির সঙ্গে কাফকার নিয়মিত দেখা হতো। আর যখনই দেখা হতো তখনই কাফকা একটি চিঠি দিতেন মেয়েটিকে, বলতেন সেই একই কথা, ‘চিঠিটি তার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের লেখা’, এবং পড়ে শোনাতেন তার প্রিয় পুতুলের বিশ্ব-ভ্রমণের রোমাঞ্চকর সব বর্ণনা খুব যত্নের সাথে, যে বর্ণনাগুলো মেয়েটিকে ভীষণ আনন্দ দিত।

এর কিছুদিন পর একদিন কাফকা একটি পুতুল কিনলেন এবং মেয়েটিকে দিলেন। বললেন, ‘এই নাও, তোমার হারিয়ে যাওয়া সেই পুতুল।’

মেয়েটি বললো, ‘এই পুতুলটি মোটেও আমার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের মতো দেখতে নয়।’

কাফকা তখন মেয়েটিকে আরও একটা চিঠি দিলেন যেটাতে তার প্রিয় পুতুলটি তাকে লিখেছে, ‘ভ্রমণ করতে করতে আমি অনেক পাল্টে গিয়েছি।’

ছোট্ট মেয়েটি তখন নতুন পুতুলটিকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরল এবং অপার আনন্দে ভাসল।

এর এক বছর বাদে কাফকা মারা যান।

বহু বছর বাদে, সেই ছোট্ট মেয়েটি যখন অনেক বড় হয়ে গেছে, তখন সে সেই পুতুলটির ভিতরে একটি ছোট্ট চিঠি পায়। কাফকার সই করা ছোট্ট সে চিঠিটিতে লেখা ছিল, ‘Everything you love will probably be lost, but in the end, love will return in another way.’ ....
 
💙
[ফ্রান্ৎস কাফকা ছিলেন জার্মান ভাষার উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক।]

ঘোড়া কাহিনি

আসসালামু আলাইকুম 

✍️জাপানের তাকামায়া গ্রামে একজন জ্ঞানী ও বৃদ্ধ কৃষক বাস করতেন।
✍️ কৃষক লোকটির একটা সুন্দর ও শক্তিশালী ঘোড়া ছিল। কৃষি কাজে , ভারী জিনিস বহনে ও নিত্যদিনের চলা ফেরায় ঘোড়াটিকে তিনি ব্যবহার করতেন।   
✍️একদিন ঘোড়াটি হারিয়ে গেলো। তাকে আর খুঁজে পাওয়া গেলো না। কৃষকের স্ত্রীর খুব মন খারাপ। কিন্তু কৃষক লোকটির কোন অস্থিরতা নেই। তার কোন আফসোস নেই। হারিয়ে যাওয়া ঘোড়ার জন্য তার কোন দুঃচিন্তা নেই। তাকে দেখে মনে হচ্ছে কোন কিছুই যেন হারায়নি।  

✍️আসে পাশের প্রতিবেশীরা এসে বললো, "তোমার কি দুর্ভাগ্য ! একটা মাত্র ঘোড়া তাও হারিয়ে গেলো " 
এই কথা শুনে কৃষক লোকটি একটু মৃদু হেসে বললো , "হতে পারে" 
✍️তার কিছুদিন পর ঘোড়াটি আবার কৃষকের বাড়ি ফিরে আসলো এবং তার সাথে আরোও তিনটি বন্য ঘোড়া।  
✍️কৃষকের বাড়িতে অনেক আনন্দ। শুধু হারানো ঘোড়া ফিরে আসেনি, তার সাথে আবার আরোও তিনটা ঘোড়া।  
✍️প্রতিবেশীরা আবার দেখতে আসলো। সবাই লোকটিকে বলতে থাকলো, "তোমার কি সৌভাগ্য, হারানো ঘোড়া ফিরে পেয়েছো সেই সাথে আবার তিনটা বাড়তি ঘোড়া"
✍️কৃষক আগের মতই হাসি মুখে বললো, "হতে পারে"
✍️দুই দিন পর কৃষকের একমাত্র ছেলে একটা বন্য ঘোড়ায় চড়তে চেষ্টা করে। কিন্তু ঘোড়া থেকে ছিটকে পড়ে যায় এবং পড়ে গিয়ে তার পা ভেঙে ফেলে।  
✍️এই খবর শুনে প্রতিবেশীরা এসে খুবই আফসোস করলো। কৃষককে দুঃখ করে বললো, "এমন করে ছেলের পা ভেঙে গেলো, সত্যিই বড়  দুর্ভাগ্য!"
✍️কথা শুনে কৃষক লোকটি মুচকি হেসে বললো, 
"হতে পারে" 
✍️পরদিনই কৃষকের বাড়িতে রাজার সৈন্যরা এসে হাজির। যুদ্ধের জন্য তারা গ্রামের যুবক ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যেতে এসেছে। কিন্তু কৃষকের ছেলের ভাঙা পা দেখে তাকে না নিয়েই চলে গেলো।  
✍️এইবার প্রতিবেশিরা এসে সবাই বললো, "তোমারতো দেখছি অনেক বড় সৌভাগ্য, ছেলেকে আর যুদ্ধে গিয়ে মরতে হবে না"
মৃদু হেসে কৃষকের একই উত্তর, "হতে পারে" 

✍️আমাদের জীবনের ঘটনাগুলোও অনেকটা একইরকম। কোন ঘটনা কি প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে তা আমরা আগে থেকে জানি না বা জানতে পারি না। তাই, সাময়িক যে ঘটনা ভালো সেটা পরে ভালো নাও থাকতে পারে, ঠিক তেমনিভাবে খারাপ ঘটনার পিছনেও অনেক ভালো কোনো ফল থাকতে পারে। 
✍️জীবনে অন্ধকার যেমন আসবে, ঠিক তেমনিভাবে আলোও আসবে। সুখ এবং দুঃখ দুটিই আমাদের জীবনের অংশ।

# foryoupage#viralpost#tending