মেয়েটাকে এক রাতের জন্য ভাড়া করে নিয়ে
এসেছিলাম।
বাড়িতে সপ্তাহ খানেক কেউ থাকবেনা।
বাব-মা জরুরী কাজে বাড়ির বাহিরে গিয়েছিলেন।ছোটবোনটা মহিলা
কলেজের হোষ্টেলেই থাকে।
বাড়ি একদম ফাঁকা.।
কেন এনেছিলাম জানেন?
আমি একটা প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে ক্রমশ ড্রাগ
এ্যাডাক্টেড হয়ে পড়েছি। মেয়েটাকে ভালবাসতাম, কিন্তু সে আমাকে ছেড়ে বিয়ে করে বরের সাথে লন্ডন চলে গেছে।কারো ধার ধারতামনা।লেখাপড়া
বন্ধ করে সারাদিন নেশায় পরেছিলাম।
তখন প্রায় পড়ালেখা শেষ,,,,,,
বাবা মা কেঁদেকেঁদে বারবার এই পথ থেকে ফিরে আসার জন্য
বলত।ছোটবোনটা প্রায়ই ফোন দিয়ে
কাঁদে,বলে ভাইয়া ফিরে আয় তুই।
কিন্তু আমার ফেরার
কোন রাস্তাই ছিলনা,কষ্টে বাঁচার কোন ইচ্ছেই
ছিলনা মনের মাঝে।
সে রাতে হিরোইন কিনে বাড়ি ফিরছিলাম।
হঠাৎ অন্ধকার রাস্তার কোন এক পাশ থেকে অচেনা একটা মেয়ে এসে বলছিলো,ভাইয়া পছন্দ হয় আমায়?
অবাক দৃষ্টিতে তাকালাম তারপর বলেছিলাম,দুরে থাক আমার থেকে,আমি ওরকম না।
মেয়েটা আরো কাছে এসে বলে,প্লিজ
ভাইয়া,দেখুন না তাকিয়ে আমার দিকে,কোন কমতি নেই আমার
মাঝে।
চেচিয়ে বলেছিলাম,তোকে বলছি না এখনি
চলে যেতে
মেয়েটা বোধহয় একটু ভয় পেয়েছিল।
ভয়ে ভয়ে বলেছিলো,টাকার খুব দরকার ছিলো,যা
দিবেন তাই দিয়েই,,,,
ভাবতে লাগলাম আমি।কাছে যা টাকাছিলো তাদিয়ে
আরো ছ দিন চলতে হবে।কোনভাবেই নষ্ট করা
যাবেনা,কারণ নেশাখোরদের কেউ টাকা ধার
দেয় না।
বাড়িতে বাবা মা-ও নেই।
ভাবছিলাম,মনেমনে কয়েক সেকেন্ড একটা
হিসেব করছিলাম।
হঠাৎ আমার ভাবনায় ছেদ করে মেয়েটা আবার
বলেছিলো,আপনি যেখানে বলবেন সেখানেই
যাব।
বললাম,আমার বাড়িতে যাবি?
মেয়েটা মাথা নাড়ে।
বেশি কিন্তু দিবোনা,তুই রাজি তো?
মেয়েটা আমার পিছনে আমায় অনুসরণ করে
চলতে থাকে,,,,,,,,,
,
কিভাবে কি করব কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না সেদিন।
ভাবলাম নেশাটা আগে সেরেনেই।
বাড়িতে গিয়ে দরজা খুলে মোমমবাতি
জ্বালিয়ে নিয়ে সবেমাত্র একটা টান দিয়েছিলাম।
মেয়েটা বলেছিলো,ভাইয়া আমার সামনে এগুলো
খাবেন না।
আমার মাথা ঘোরে,বমি আসে।
কথাটা শুনে একটু অবাক হয়েছিলাম সে রাতে।
ভাবছিলাম মেয়েটার জীবনে কি আমিই প্রথম
নেশাখোর?নাকি ওর বিছানায় শোয়া প্রত্যেকেই
ভালো ছিলো?
সন্দেহের বশে বলেছিলাম,কেন হিরোইনের ধোয়ায় তোর বুঝি
কষ্ট হয়?
ও উত্তরে বলেছিলো,হুম, খুব খারাপ লাগে,বিড়ি,
সিগারেটের ধোয়াও সহ্য হয়না আমার।
মেয়েটাকে প্রশ্ন করেছিলাম,তুই কি এই লাইনে
নতুন?
মাথা নেড়েছিলো,,,,,, ও.
বললাম তবে কেন এসেছিস এই নোংরা জগতে?
এই জগতটা তো ভালো নয়।
ও মাথা তুলে আমার মুখপানে কিছুক্ষন
চেয়েছিলো।ওর চোখমুখে ছিলো বিস্ময়ের
আবছায়া।হয়ত ও অবাক হয়েছিলো এইভেবে
যে,এমন প্রশ্ন তো কেউ কোনদিন
করেনা,এতগল্পের সময় তো কারোকাছে
থাকেনা।
ও বিছানা থেকে উঠে চলে যেতে চাইলে আমি
বলেছিলাম,পুরো দুহাজার দিবো রাতটা থাকবি আমার
সাথে? থমকে দাঁড়ায় মেয়েটা।
ফিরে এসে বিছানায় শুয়ে বলে আগে টাকাটা দিন।টাকা
বাহির করে দিলাম।তিনদিনের নেশার টাকা দিয়ে
দিয়েছিলাম ওর হাতে।
ও হেসে বলেছিলো,ভাইয়া একটু ফোন করতে
পারি?
বললাম আমার ফোননেই।
ও একটু অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিলো,ফোন
নেই? আরে নিয়ে নেব না।আমি ওরকম মেয়ে
নই।
আমি বললাম,জানি তুই ওরকম না।কিন্তু সত্যিই আমার
ফোন নেইরে,,ওটাকে বেঁচে সাতদিন আগে
হিরোইন খেয়েছি।
কিন্তু কেন বলত? ফোন কি করবি?অন্য কাউকে
বাতিল করবি নাকি?
মেয়েটা কিছুই বলেনি,কোন উত্তর করেনি।চুপচাপ
আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো,,,,,
রাত আনুমানিক বারোটা,মেয়েটা ঘুমিয়ে গেছে।
আমি কি করব বুঝতে পারছিলামনা।নেশাটাও এতক্ষনে
চড়ে বসেছে।
সিগারেটের চিকচিকে কাগজটায় হিরোইন নিয়ে
আগুন জ্বালিয়ে নিলাম।হঠাৎ মেয়েটা কেশে
উঠলো,বুঝতে পারলাম ধোয়ায় ওর কাশি উঠেছে।
হঠাৎ মেয়েটা বলে উঠে,বলেছিনা আমার সামনে
খাবেন না।যান বাহিরে থেকে খেয়ে আসুন।
আগুন নিভিয়ে বাহিরে যেতে চাইলাম।
ও আবার বলে,কেন খান এগুলো?
বললাম কষ্টে।
ও বলে,কিসের জন্য আপনার এত কষ্ট যে
জীবনটাকে এভাবে অন্ধকারে নিয়ে যাচ্ছেন?
ওর প্রশ্ন শুনে আমি অবাক হয়েছিলাম সেদিন।মাথা
থেকে পা পর্যন্ত ওর ভালো করে দেখছিলাম
সেদিন।বয়স খুব একটা না,বছর একুশ হবে হয়ত।
বলেছিলাম, তোর জীবন টা কোথায়?কোন
আলোয় আছিস তুই?
মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।একটু পর চোখের কোনবেয়ে জল গড়িয়ে আসে। আমি
আরো অবাক হয়ে যাই।
কিছুক্ষন পর চোখের জল মুছে ও বলেছিলো,কিছু করবেন না?
আমি বলেছিলাম,কিছুই করার ফিলিংস নাই রে। তুই ঘুমা,,,,,,,,,
ও আবার প্রশ্ন করে,কেন?
এমনিতেই।তুই বলেছিলি না কেন আমি নেশাকরি?
শুনবি?
মেয়েটা মাথা ঝোকায়।আমি বলি তাহলে শুন আমার
পেছনের ফেলে আসা ইতিহাস।যেখানে শুধুই হাহাকার আর কষ্ট।মেয়েটা গল্প শুনতে
শুনতে ঘুমিয়ে পরে।
পরদিন সকালে ও যখন চলে যাচ্ছিল
বলেছিলাম,তোর ঠিকানাটা দিবি?
ও বলেছিলো না।
বললাম আজ আবার এই ঠিকানায় চলে আসিস।মেয়েটা
হেসে বলে আচ্ছা,
আজ কত নিবে সে টাকার কথা না বলেই চলেগেল ও।
পরদিন ওর গল্প শুনতে লাগলাম,
ও বলে,আমি কলেজে পড়ি।এবার অনার্স পড়তাম।
যদিও বাবা বেচে নেই।
ছোট্ট একটা বোন,মা আর আমি।
এই আমার পরিবার,এই আমার দুনিয়া,,,,। দিনের বারোটা পর্যন্ত মানুষের
বাড়িতে কাজ করি আমি। বিকেলে বাচ্চাদের পড়াই।
মাঝে মাঝে কলেজে যেতাম!
আর মা সারাদিন কাজ করতেন।রাতে বাতির আলোয়
কলেজের বইপড়ি।
বছর তিনেক আগে পাঁচ হাজার টাকায় ঝি এর কাজ
করতাম এক বাড়িতে।তারা সকালে চা আর দুপুরের
খাবার দিতো আমায়।
দিব্যি চলেযেত দিন।
আমি বললাম,তারপর?
তারপর যখন ,সেকেন্ডারি পাশ করেছিলাম,কলেজে
ভর্তি হলাম।লেখাপড়ার খরচ বাড়তে লাগলো।
প্রাইভেট পড়ার সময় ছিলোনা,নোট প্রয়োজন
দেখা দিত।প্রথম প্রথম বান্ধবীদের থেকে
নিতাম।কিন্তু ঝি এর কাজের জন্য প্রতিদিন কলেজে
যেতে পারতাম না।তাই তারাও আর নোট দিতনা।
অবশেষে বাড়ির মালিককে বলে দুপুরের খাবারের
বদলে একহাজার টাকা বেতন বাড়িয়ে নিয়েছিলাম।
সকালের নাস্তার দুটো বিস্কুট আর এক কাপ চা
খেয়েই কাজ করতাম সারাদিন।
এটুকু খেয়ে তুই থাকতে পারতি? তোর কষ্ট হতনা?
প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হয়েছিলো।পেটে
মোচড় দিয়ে ব্যাথা হত।মাথা ঘুরে পরেও গিয়েছিলাম
কয়েকদিন।
জানেন,মালিকে বাড়িতে দুটো গরু ছিলো।বহু গরুকে খাবার দিতে গিয়ে ঐ পচা পান্তা গুলো
খেয়েছিলাম।কি করব,ক্ষুধার জ্বালায় থাকতে পারতাম না।আর কাজ না করলে মালিক তো
বেতন দিবে না।
রাতের খাবার মা অন্যের বাড়ি থেকে আনত।
ছোট বোনকে খাওয়ানোর পর যা থাকত,মা আর আমি ভাগ
করে খেতাম।
আমি মা কে বলতাম মা,জীবনে একদিন সুখ আসবেই।
একদিন কষ্টগুলো সুখে রুপান্তরিত হবেই।
তারপর?
মেয়েটা আবার বলতে থাকে,
আমি ইন্টার পাশ করলাম।কিন্তু আর ভার্সিটিতে ভর্তি
হতে পারিনি।
যে বস্তিটাতে থাকতাম কয়েকদিন আগে সেখানে
আগুন লাগে।
ঘরে যা টাকা ছিল সব আগুনে পুড়ে গেছে।
খুব কষ্ট পেয়েছিলাম আমি।আবার কষ্টটাকে বুকে
টেনে নিয়েছিলাম।এবার বিকেলে বস্তির বাচ্চাদের
পড়াতে শুরু করেছিলাম।ভেবেছিলাম,এবছর না
হোক সামনে বছর আবার ভর্তি হব।
কিন্তু হয়ত সে
কপাল আমার নেই।একরাতে বাড়ি ফেরার পথে মা
এক্সিডেন্ট করে বসেন।
কষ্টটা যেন এবার নিয়তি হয়ে গিয়েছিলো।
কি করব আমি,
কোনদিকে যাব?
ভাবতে লাগলাম গরিবের দুঃখই যে নেয়.....!!!
একদিকে ছোটবোন,
আরেকদিকে হাসপাতালে মা।কোন
পথ না পেয়ে দিনের কাজের পাশাপাশি রাতে এ পথে
নেমে এলাম,,,,
তারপর কি হল রে,,,,,,,
মেয়েটার কন্ঠ ভারি হয়ে আসে,ও কাঁদোকাঁদো
স্বরে বলতে থাকে,
ব্যবসা করতে লাগলাম নিজের দেহ দিয়ে,,
আজ একটা মাস যাবত মার কাছে ছোট বোনকে
রেখে রাতে পড়ার নামে বেড়িয়ে পরি আমি।
বিক্রি করে বেড়াই নিজের দেহকে নিয়ে।
দেহটার কত মূল্য হবে নিজেই ঠিক করে দেই,,,,
কাঁদতে থাকে মেয়েটি,কাঁদতে থাকি আমি।
মেয়েটা তারপর থেকে রোজ আসত।
আমি বুঝতে পারি আমার হিরোইনের নেশাটা এখন বদলে
গেছে।
নেশাটা এখন ওর গল্প শোনায় রুপান্তরিত হয়েছে।
আমিও তখন নেশা বাদ দিয়ে তার সাথে সময় কাটাতাম
হঠাৎ একদিন শুনলাম ওর মা মারা গেছে।
খুবই দুঃখ পেলাম,,,,,,,,,,, কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
আমি বাবাকে বললাম তার জীবনের কাহিনী ও আমার খুজে পাওয়া,,,..... বলেছিলাম।
বাবা আমার
স্বপ্ন তো জোড়া লেগে ভেঙেছিলো,
কিন্ত আমি এ মেয়েটা স্বপ্নের খোজটুকুও পায়নি।
বাবা বিজ্ঞান বিষয় খুব
ভালো বুঝতেন।দুটো কালো মেঘের ঘষায়
সৃষ্ট বিদ্যুৎ যে সবাইকে আলোকিত করতে পারে,
এই হিসাবেই আমি আর মেয়েটাকে একত্র করে
দিলেন।
বিয়ে দিয়ে বাবা বলেছিলেন,দুজনের
অন্ধকার জীবনটাকে এবার আলোকিত করো তোমরা।
আর আমি হয়ে গেলাম বিবাহিত
ও হ্যা, মেয়েটার নাম তানিশা।
আজ আমাদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী। আমি, তানিশা ,বাবা-মা-বোন,আমাদের ছোট শিশু স্বপ্ন
আর ওর ছোটবোন মুনিরা, ওর মার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করছি। তানিশা কেঁদে কেঁদে বলল,মা বলেছিলাম না, সুখ একদিন আসবেই।
আজ দেখ আমি কত সুখে আছি,কিন্তু তোমার অনুপস্তিতিতে।
অাপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।
#কালেক্ট
Auto paragraph Facebook/Computer/Mobile phone/Internet/Television ( এই গুলার যে কোন একটা .......... দেওয়া জায়গা গুলাতে বসাতে হবে ) ..............is one of the greatest invention of modern science. It has made our life easy and comfortable. We use it in our daily life. We cannot think of our day without.......... . We can communicate with anyone of anywhere of the world by using.......... . It has made the word smaller. We can share our feelings, liking and disliking’s with others using............. . Nowadays......... has become a great medium of learning. People can learn many things using........ sitting at home. It is a great source of entertainment also. We can watch videos music news sports etc through.......... .we need not to go to stadium. Inspire of having so many good sides it has some bad sides also. It is harmful for our body. Sometimes students become addicted to it. At last it can be said that.......... is a ...
Comments
Post a Comment