হযরত মুসা আলাইহিসালাম এর জামানার ২টি সুন্দর শিক্ষণীয় ঘটনা।
আশা করি ভালো লাগবে এবং কিছু শিখতে ও জানতে পারবেন।
ঘটনা ১ :
তৎকালীন মিশরের জমিতে অনেক দিন বৃষ্টি নেই। তীব্র খরা উত্তাপ রোদে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পরে। মিশরবাসী কোন উপায় না দেখে নবী মুসা আলাইহিসালাম এর নিকট আসলেন এবং বললেন
হে আল্লাহর পয়গম্বর আপনি বৃষ্টির জন্য প্রতিপালকের নিকট দোয়া করেন না হলে তীব্র খরা অনাবৃষ্টিতে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশু গুলোও মারা যাবে।
মুসা নবী কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন বলেন আল্লাহ মিশরের জমীনে অনেক দিন বৃষ্টি নেই তুমি বৃষ্টি দাও আল্লাহ তুমি বৃষ্টি দাও দয়া করো।
হঠাৎ__
ওহী নাজিল হলো.....
আল্লাহ বললেন হে মুসা বৃষ্টি হবে কিন্তু তোমার ঐ মজলিশে লোকেদের ভীড়ে একজন পাপিষ্ঠ জেনাকারি লোক আছে।
তাকে মজলিশ থেকে বের করে দাও।
যতক্ষন ঐ জেনাকারি মজলিশে অবস্থান করবে
তোমার দোয়া কবুল হবেনা এবং বৃষ্টি হবেনা।
মুসা নবী রাগান্বিত হয়ে মজলিশের লোকদের উদ্দেশ্যতে বললেন
কে আছো এখানে সেই পাপিষ্ঠ জেনাকারি? সে বের হয়ে যাও অবলিম্বে সে যতক্ষন এখানে অবস্থান করবে দোয়া কবুল হবেনা এবং বৃষ্টিপাত ও হবেনা।
মজলিশের মধ্য জিনাকারি ব্যাক্তি মনে মনে বললো আমি যে জেনা করেছি লোকেরা তা এখনি জেনে যাবে।
সবাই আমাকে ছিঃ ছিঃ করবে ধিক্কার জানাবে।
আবার অপরদিকে আমার জন্য এতগুলো মানুষ অনাবৃষ্টির ভুক্তভোগী হবে।
তখন জেনাকারি লোকটি মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানালো
হে আল্লাহ দয়ার মালিক আমি জেনাকারি পাপিষ্ঠ এই কথা আমার মা জানেনা বাবা জানেনা কেউ জানেনা তুমি এতদিন গোপন রেখেছো।
আজকেও তুমি গোপন করে দাও।
আমি তওবা করছি খাটি দিলে তওবা করছি দয়ার মালিক তুমি আমার ইজ্জত রক্ষা করো।
আমাকে প্রকাশ্য এনোনা আমার পাপ গোপন রাখো।
আমার তওবা কবুল করো।
হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেলো এবং মুহুর্তের মধ্য বৃষ্টির ধারা শুরু হয়ে গেলো।
হযরত মুসা আলাইহিসালাম বিস্মিত হয়ে গেলো।
মুসা আলাইহিসালাম বললেন হে আল্লাহ তুমি বললে মজলিশে সেই পাপিষ্ঠ না বের হলে তুমি বৃষ্টি দেবেনা দোয়া কবুল করবেনা।
তাহলে কি এমন হলো সেই পাপিষ্ঠ ব্যাক্তি অবস্থানরত থাকাকালীন তুমি বৃষ্টি দিলে????
মহান দয়াময় আল্লাহ বললেন
হে মুসা নিশ্চয় আমি যা জানি তা তুমি জানোনা।
যার কারনে বলেছি বৃষ্টি দেবোনা তার কারনেই বৃষ্টি দিলাম। এই বৃষ্টির উছিলায় সে তার স্বীয় পাপের জন্য ক্ষমা চেয়েছে তওবা করেছে।
তাই আমি তার তওবা কবুল করে তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছি।
এই ঘটনা আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে মহান আল্লাহর দরবারে খাটি দিলে তওবা করলে নিশ্চয় তাই কবুল হয়। কারন আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। আল্লাহ আমাদের সকলকে খাটি দিলে তওবা করার তৌফিক দান করুক আমীন।
ঘটনা : ২
এক মহিলা মুসা আলাইহিসালাম এর নিকট কাঁদতে কাঁদতে এসে বললেন
হে আল্লাহর নবী মুসা আমি একটা জঘন্য পাপ করে ফেলেছি।
আমি শয়তানের ধোকায় পরে জেনাকরে ফেলেছি। এবং আমার পেটে একটি অবৈধ সন্তান জন্ম নেয়
জন্মের পর আমি তাকে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলেছি।
হে আল্লাহর নবী আপনি আমাকে বলুন তওবা করলে কি আমার গুনাহ মাফ হবে????
মুসা আলাইহিসালাম বললেন
একে তো জেনা করছো তার উপর
এক নিষ্পাপ বাচ্চাকে মেরে ফেলেছো।
দূর হও তোমার গুনাহ মাফ হবেনা। মহিলা মুসা আলাইহিসালাম এর কথা শুনে কাঁদতে কাঁদতে যেমন এসেছিলেন তেমনি চলে যেতে যেতে বললেন আমার থেকে বড় পাপী আর কেউ নেই জাহান্নামের ভয়াবহ আগুন থেকে আমার বাচার কোন পথ নেই।
তখনি ফেরেশতা জিব্রাঈল মুসা আলাইহিসালাম এর নিকট আসলেন।
আর বললেন হে নবী আপনি এইটা কি করলেন?
কেন তাকে তওবা করতে বললেন না?
মহান আল্লাহ বলেছেন ঐ নারী তওবা করে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দিবেন।
ফেরেশতা জিব্রাঈল বললেন ঐ নারীর থেকেও নিকৃষ্ট পাপিষ্ঠ মানুষ আছে।
মুসা নবী বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন ঐ মহিলার থেকেও নিকৃষ্ট পাপিষ্ঠ বান্দা আছে??? তারা কারা আমাকে বলো।
ফেরেশতা জিব্রাঈল বললেন এই নারীর থেকেও নিকৃষ্ট পাপী তারা
যারা সুস্থ সবল থাকার পরেও মহান আল্লাহকে সেজদা করেনা অর্থাৎ নামাজ পড়েনা।
ফেরেশতা জিব্রাঈল বিদায় নিলে
মুসা আলাইহিসালাম সেই জেনাকারি মহিলাকে খুঁজতে শুরু করলেন।
অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর
মহিলার সন্ধান পেলেন এবং দেখলেন মহিলাটি একটি ঘরের দরজার উপরে বসে কাঁদছে তিনি মহিলাটিকে ডাকলেন এবং বললেন খাটি দিলে তওবা করলে আল্লাহ তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।
মহিলাটি এত খুশি হলেন যে নবীর কথা শোনার সাথে সাথেই আল্লাহর সেজদায় পরে গেলেন এবং তওবা করলেন।
এই ঘটনা আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে নামাজ না পড়ার গুনাহ জেনাকারি গুনাহের থেকেও নিকৃষ্ট।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক আমীন
(কালেক্টেড)
Comments
Post a Comment