Wednesday, April 3, 2024

সূর্যরশ্মি দিয়ে রান্না যেভাবে পরিবেশ ও প্রাণরক্ষায় সাহায্য করে

সূর্যরশ্মি দিয়ে রান্না যেভাবে পরিবেশ ও প্রাণরক্ষায় সাহায্য করে

প্রাচীন গ্রীক, রোমান এবং চীনা সভ্যতায় সৌরশক্তি ব্যবহার করা হত বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তবে সূর্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে রান্না করার কথা কখনও শোনা যায়নি। ১৭৬৭ সালে হোরাস-বেনেডিক্ট ডে সউসিয়োর নামের একজন সুইস ভদ্রলোক প্রথম সৌরশক্তি চালিত চুলার পদ্ধতি নিয়ে অ্যাকাডেমিক বর্ণনা তৈরি করেন। 

সউসিয়োর ছিলেন এজন ভূ-তত্ত্ববিদ, আবহাওয়াবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী এবং অ্যালপাইন পর্বতারোহী। সূর্যের আলোর শক্তি কাজ লাগানোর জন্য তিনি ছোট একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। সে সময় অনেক বিজ্ঞানী সূর্যশক্তিকে তাপশক্তিতে রূপান্তরের জন্য কাজ করছিলেন। তাদের বেশিরভাগের কাজ ছিল আয়না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে উত্তপ্ত করার কৌশল নিয়ে। অন্যদিকে সউসিয়োর কাজ করছিলেন কাচের তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা নিয়ে।

সউসিয়োর এর তৈরি যন্ত্রকে মানুষের তৈরি সবচেয়ে প্রাচীন সোলার কুকার বা সৌর চুলা বলা যায়। এ সময় আমরা যে বক্স সৌর চুলা দেখি সেটার সাথে সউসিয়োরের এর চুলার অনেক মিল আছে। 

তিনি ৫টি কাচের বাক্সকে একটার ভেতরে আরেকটা বসান। এরপর পুরো জিনিসটাকে বসান একটা কালো কাঠের টুকরার ওপর। বেশ কয়েক ঘণ্টা সূর্যের আলোতে রাখার পর বাক্সের ভেতরের তাপমাত্রা ১৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (৮৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পৌঁছে যেত। সউসিয়োর এই বক্স ব্যবহার করে ফল সেদ্ধ করতেন। তবে সূর্যের আলোকে খাবার রান্না করা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিল ১৮৭০ এর দিকে ফরাসি সেনাবাহিনী।

১৮ শতকের দিকে সৌর চুলার বিষয়টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হিসাবে শুরু হয়েছিল। সবাই দেখতে চেয়েছিল কেন এবং কীভাবে কাচের মধ্যে সূর্যের আলো জমা হয়ে তাপ সৃষ্টি করে। আর এখন এই কৌশলই পৃথিবীর সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে ক্ষুধা আর ব্যাধি দূর করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। 

আধুনিক সময়ে সৌর চুলায় রান্না নিয়ে কাজ হয়েছিল ১৯৫০ এর দিকে, কিন্তু তা জনপ্রিয় হতে পারেনি। এর জন্য অনেকে জাতিসংঘের ভুল মার্কেটিং টেকনিক এবং অতিরঞ্জিত দাবিকে দায়ী করেন। 

সঠিক যন্ত্র থাকলে সূর্যরশ্মিতে থাকা শক্তি কাজে লাগিয়ে অনেক উত্তাপ তৈরি করা যায়। এত উত্তাপ যে তাতে খাবার তেলে ভাজা সম্ভব হয়। একটা চুলা বা ওভেন দিয়ে যা করা সম্ভব, সৌর চুলা তার প্রায় সবকিছুই করতে পারে। পার্থক্য হল, এই চুলায় প্রাকৃতিক ও দূষণমুক্ত জ্বালানি ব্যবহার করা হয়, যা কিনতে কোনো টাকা লাগে না। 

এই লেখায় আমরা বোঝার চেষ্টা করব, কীভাবে সূর্যের আলো তাপে পরিণত হয়। আমরা বিভিন্ন রকমের সৌর চুলার বিষয়ে জানব, জানার চেষ্টা করব কীভাবে এগুলি কাজ করে। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও সৌর চুলা কীভাবে বিশ্বের বিভিন্ন অংশের মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে, সেসব নিয়েও আমরা কথা বলব। 

তাহলে মূল বিষয়ে প্রবেশ করা যাক: কীভাবে সূর্যরশ্মি বা তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ তাপে পরিণত হয়?.
.

# আলোর সাহায্যে রান্না

স্টোভ আর ওভেন দিয়ে আমরা মাংস, সবজি, ডাল, ভাত, রুটি, ফল সবকিছুই রান্না করতে পারি। আমরা সেদ্ধ করতে পারি, ভাপ দিতে পারি, ভাজতে পারি, পোড়াতে পারি। সৌর চুলা দিয়েও আমরা এসব কিছু করতে পারি। তবে এখানে গ্যাস বা বিদ্যুতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় সূর্যালোক।

সূর্যরশ্মি নিজে গরম নয় অথবা এর ভেতরে গরম থাকে না। এটা হচ্ছে বিকিরণ অথবা আলোর তরঙ্গ—মূলত তড়িৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের তারতম্য থেকে এখানে শক্তি উৎপন্ন হয়। আলোর তরঙ্গ যখন আপনার চামড়ার অণুতে গিয়ে বাড়ি খায়, তখন আপনার চামড়ায় গরম লাগে। এই একই ধরনের বিষয় ঘটে সৌর চুলাতেও। এক ধরনের সৌর চুলা আছে বক্স কুকার নামে, যেটা সূর্যের আলো দিয়ে অনেক তাপ উৎপন্ন করতে পারে।  

সহজ করে বলতে গেলে, সূর্যের আলোর শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, যখন আলোর তরঙ্গের মধ্যে থাকা ফোটন (আলোর কণা) কোনো কিছুর অণুর সাথে মিলিত হয়। সূর্য থেকে নির্গত হওয়া তড়িৎচৌম্বকীয় রশ্মিতে অনেক শক্তি সঞ্চিত থাকে। যখন এই রশ্মি কোনো বস্তুর ওপরে পড়ে, বস্তুটি কঠিন বা তরল যাই হোক না কেন, সেই শক্তির কারণে ওই বস্তুর অণুগুলি কাঁপতে শুরু করে। কাঁপতে কাঁপতে অণুগুলি উত্তেজিত হয়ে যায় এবং লাফাতে শুরু করে। এভাবেই সৃষ্টি হয় তাপ। সৌর চুলা দুইটি উপায় কাজে লাগিয়ে এই তাপ ব্যবহার করতে পারে।  
 
১. বক্স কুকার

বক্স কুকার হচ্ছে সাধারণ ধরনের একটি সোলার কুকার। ৩-৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই কুকারটি প্রকৃত অর্থেই একটি সৌরশক্তি চালিত ওভেন। এখানে একটি বদ্ধ বক্স থাকে, যেটি সূর্যের আলোতে উত্তপ্ত হয়। এই উত্তাপ বক্সের মধ্যেই জমা হতে থাকে। 

সবচেয়ে পরিচিত যে বক্স কুকার, সেখানে ওপরের দিকে খোলা একটি বক্স থাকে। এই বক্সের ভেতরে কালো রঙ করা থাকে। আর বক্সের ওপরে থাকে এক খণ্ড কাচ অথবা স্বচ্ছ প্লাস্টিক। অনেক সময় বক্সের ভেতরে একাধিক প্রতিফলক থাকে। প্রতিফলক হচ্ছে আয়না অথবা ধাতুর তৈরি সমতল পৃষ্ঠ। এই প্রতিফলকগুলি বক্সের বাইরে বসানো থাকে। এগুলির কাজ কাচের ভেতরে অতিরিক্ত সূর্যালোক প্রতিফলিত করা।

রান্না করার জন্য আপনাকে এই বক্সের ভেতরে খাবারের বাটি দিয়ে পুরো বক্সটি সূর্যের আলোতে বসিয়ে রাখতে হবে। খাবারের বাটি বসানো হবে বক্সের কালো রঙ করা তলার ওপরে। সূর্যালোক যখন ওপরের কাচের মধ্য দিয়ে বক্সে প্রবেশ করবে, তখন আলোর তরঙ্গ বক্সের কালো তলে প্রতিফলিত হবে এবং তলটি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে যাবে। 

আমরা জানি গাঢ় রঙ বেশি তাপ শোষণ করে। এ কারণেই বক্সের ভেতরে কালো রঙ করা থাকে। বক্সটি যে অণু দিয়ে তৈরি, তাপের কারণে সেগুলি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এই কারণে আরও বেশি তাপ উৎপন্ন হয়। এভাবে বক্সের ভেতরে তাপ জমা হতে থাকে, উত্তপ্ত হতে থাকে। একটি সাধারণ ওভেনে যেমন খাবার রান্না করা যায়, এই সৌর চুলাতেও তেমনি রান্না করা যায়। একটা বক্স কুকারের তাপমাত্রা ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। আর নিরাপদে খাবার রান্না করার জন্য এই তাপমাত্রা যথেষ্ট।

২. প্যারাবোলিক বা পরাবৃত্ত আকারের কুকার

প্যারাবোলিক বা পরাবৃত্ত আকারের কুকার বক্স কুকারের চেয়ে আরও বেশি উত্তপ্ত হতে পারে। এর উত্তাপ পৌঁছাতে পারে ৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত, যা দিয়ে সহজেই ভাজি করা যাবে অথবা রুটি তৈরি করা যাবে। 

এই ধরনের কুকারের নকশা একটু জটিল হয়। এখানে বাঁকানো প্রতিফলক তল দিয়ে একটি ছোট জায়গাতে অনেক সূর্যালোক কেন্দ্রীভূত করা হয়। তখন এটি অনেকটা স্টোভ বা উনুনের মত কাজ করে। এটি কুকারটি বেশ বড় হয়, কখনও কয়েক ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বাঁকানো প্রতিফলকগুলির মাঝখানে একটা জায়গা থাকে। এই জায়গাতেই খাবারের পাত্রটি রাখতে হয়। পাত্রটি কুকারের তলা থেকে খানিকটা ওপরে থাকে আর ওই জায়গাতেই সব আলো কেন্দ্রীভূত হয়। ওই ছোট্ট জায়গাটি এত বেশি গরম হয় এবং অণুগুলি এত বেশি কাঁপতে শুরু করে যে তাপপ্রবাহ ওপরের দিকে গিয়ে খাবারের পাত্রের তলাকে উত্তপ্ত করতে থাকে।

প্যারাবোলিক কুকার আর বক্স কুকার দুটিই বেশ বড় আকারের হয়। ফলে এগুলি নিয়ে চলাফেরা করা মুশকিল। আবার বক্স কুকারগুলি কাচ দিয়ে তৈরি বলে ওজনে বেশ ভারি হয়। 
.

এছাড়া আছে প্যানেল কুকার, এগুলিতে বক্স আকারের ওভেনের ওপর প্যারাবোলা আকারের প্রতিফলক বসানো থাকে। এই কুকারগুলি তুলনামূলক ছোট এবং হালকা হয়। রান্না করার সময়, রান্নার পাত্র একটি প্ল্যাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে থাকে। এতে করে ব্যাগের ভেতর তাপ আটকা পড়ে যায় (যেমনটা বক্স কুকারে দেখা যায়)। মানুষ এইসব কুকার ক্যাম্পিং এর সময় ব্যবহার করে থাকে।

তবে সৌর চুলার আসল ব্যবহার কেবল ক্যাম্পিং করার সময় ভাবলে ভুল হবে। এই চুলার আসল ব্যবহারের সাথে যোগ আছে দারিদ্র্য, ক্ষুধা আর রোগমুক্তির।
.

# সূর্যালোক দিয়ে রান্না কীভাবে আমাদের সাহায্য করতে পারে

১. সূর্যালোকের শক্তি দিয়ে রান্নার সুবিধা

বিশ্বজুড়ে এমন কোটি কোটি মানুষ আছে, যারা খাবার রান্না করার জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি পায় না। বিদ্যুৎ আর গ্যাস থাকা তো দূরের কথা, রান্নার জন্য তাদেরকে কেবল কয়লা আর কাঠখড়ির ওপর নির্ভর করতে হয়। 

আজকাল কয়লাও বেশ দামি হয়ে গেছে। ফলে সস্তা জ্বালানি হিসেবে আছে একমাত্র কাঠ। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ভারত ও আফ্রিকার অনেক অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণে গাছপালাও নেই। একটা পরিবারের জন্য সারাদিনের রান্না করতে অনেক পরিমাণ কাঠের প্রয়োজন হয়। আর এই কারণে বিশ্বে জ্বালানি কাঠের উৎসগুলি দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। 

বনাঞ্চল থেকে কাঠ সংগ্রহ করে আনতে, এক একটি পরিবারের সদস্যদের অনেক ঘণ্টা পরিশ্রমও করতে হয়। অনেক সময় জ্বালানি কেনার জন্য এই গরিব মানুষদের টাকা খরচ করতে হয়। ফলে খাবার কেনার জন্য তাদের কাছে আর যথেষ্ট টাকা থাকে না।

২. রোগব্যাধি কমাতে সোলার কুকার

প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ যেখানে নিরাপদ পানীয় জলের উৎস থেকে বঞ্চিত, পাস্তুরিত করে জীবাণুমুক্ত করার বিষয়টি সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পাস্তুরিত করা বলতে বোঝায় কোনো কিছুকে এমন উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা, যাতে এর মধ্যে থাকা অণুজীবগুলি মরে যায়। 

প্রতি বছর ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিবাহিত রোগে মারা যায় ২০ লক্ষ মানুষ। কেবল পাস্তুরিত পানি পানের মাধ্যমে এই মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। এছাড়া সঠিকভাবে মাংস সিদ্ধ করা বা দূষিত পানি দিয়ে চাষ করা সবজি ভালভাবে রান্না করাও অনেক জরুরি। কেননা এর মধ্যে থাকতে পারে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, কৃমি এবং ভাইরাস। আর এমন খাবার খেলে হেপাটাইটিস এ, জিয়ারডিয়া এবং ই. কোলাইজনিত বিষক্রিয়া থেকে প্রাণঘাতি অসুখ পর্যন্ত হতে পারে।

পাস্তুরিত করতে খুব বেশি তাপের প্রয়োজন হয় না। যেমন পানি পাস্তরিত করতে ১৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং খাবারের জন্য ১৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রাই যথেষ্ট। 

মাত্র ১০ ডলার খরচে তৈরি, সহজ নকশার সৌর চুলা দিয়ে খুব সহজে পাস্তুরিত তাপসীমার উচ্চমাত্রায় পৌঁছানো যায়। আবার এই সৌরচুলায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খাবারও রান্না হয়ে যায়। তবে রান্নার সময় নির্ভর করে কী ধরনের খাবার আর কেমন চুলা ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর। সবচেয়ে ভাল বিষয়টি হচ্ছে, মানুষকে এখন আর জ্বালানি খোঁজার জন্য মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয় না। তারা কেবল ঘরের বাইরে চুলা বসায়, আর সূর্যের তাপ ব্যবহার করে—তাও একদম বিনামূল্যে। এক বছরে একটি সৌরচুলা এভাবে প্রায় ১ টন (০.৯ মেট্রিক টন) জ্বালানি কাঠ পোড়ানো বন্ধ করতে পারে।

৩. বায়ু দূষণ কমাতে সোলার কুকার

কাঠ পোড়ানোর আরও একটি অসুবিধা থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে সৌর চুলা। কাঠ পোড়ানোর সময় বায়ু দূষণ হয়। কাঠ পোড়ানো ধোঁয়াতে থাকে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা, যেগুলি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এমন বাতাসে যারা শ্বাস নেয় তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। মানুষ যখন ঘরের ভেতরে এমন উন্মুক্ত চুলায় রান্না করে, তখন তাদের নিঃশ্বাসের সাথে অসংখ্য ক্ষুদ্র কণা শরীরে প্রবেশ করে। এগুলির জন্য হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসের অসুখসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।

একটা গবেষণায় দেখা গেছে, এমন বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। সৌর চুলা ব্যবহার করা হলে, এমন উন্মুক্ত উনুনের প্রয়োজন আর থাকে না। তখন বাতাসও অনেক দূষণমুক্ত থাকে।
.

অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য সৌর চুলা দারুণ সমাধান মনে হলেও, এর কিছু সমস্যা আছে। সৌর চুলা যে কারণে এত বেশি উপকারী, অর্থাৎ সূর্যের আলো ব্যবহারের বিষয়টাই এখানে মূল সমস্যা। এমন চুলা ব্যবহার করা কেবল বিশ্বের কয়েকটি দেশেই সম্ভব, সে সব দেশে যেখানে অন্তত বছরের অর্ধেক সময় শুকনা ও রোদ ঝলমলে আবহাওয়া থাকে। ব্রাজিল, কেনিয়া, ভারত এবং ইথিওপিয়ার কিছু অঞ্চলে রান্নার জন্য আদর্শ আবহাওয়া থাকে।

তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, অনেক জায়গায়ই সূর্য থেকে যে সব সময় রোদ পাওয়া যায়, তা নয়। তাই রাত্রিবেলা বা মেঘলা দিনে সৌর চুলা দিয়ে রান্না করা যায় না। রোদ না থাকলে মানুষকে ঠিকই তখন জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভর করতে হবে। এরপরেও, দিনের অধিকাংশ রান্না যদি কাঠের বদলে সূর্যের আলো দিয়ে করা সম্ভব হয়, জ্বালানি সংকটে থাকা মানুষের যে তাতে বিশাল উপকার হবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

#সোলারকুকার #সৌরচুলা #পরিবেশ
Collected 

No comments:

Post a Comment