Skip to main content

web 3 details in bangla

ওয়েব ৩.০

ধরুন, আপনি মুভি দেখতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। মুভি শেষ করে কিছু একটা খাবেন। আজকে আপনার কমেডি মুভি দেখার মুড। আর খাবার হতে হবে প্রচণ্ড ঝাল মেক্সিকান কিছু। আপনি কম্পিউটার চালু করে ওয়েব ব্রাউজার খুললেন। প্রয়োজন মত সিনেমা, সিনেমা হল এবং হলের আশেপাশে খাবারের দোকানের খোঁজে গুগল সার্চ করলেন।

আপনার বাসার কাছের সিনেমা হলে কোন মুভি দেখাচ্ছে তা জানতে চান আপনি। কয়েকটি মুভির মধ্য থেকে কোনটি দেখবেন তা ঠিক করার জন্য মুভিগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণী পড়লেন। পাশাপাশি, হলের আশেপাশে কোনো ম্যাক্সিকান রেস্টুরেন্ট আছে কিনা তাও খুঁজে দেখলেন। খাবারপ্রেমীরা এই রেস্টুরেন্ট নিয়ে কী ভাবে তা যাচাই করার জন্য কিছু রিভিউও পড়লেন। সব মিলিয়ে বাইরে বের হবার আগেই আপনি প্রায় হাফ ডজন ওয়েবসাইট দেখে ফেললেন। সব মিলিয়ে আপনার আধা ঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট সময় গেল!

ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরবর্তী প্রজন্মের ওয়েব অর্থাৎ ওয়েব ৩.০ (থ্রি জিরো), আপনার মুভি দেখা ও খাবার খোঁজার মত কাজকে আরো দ্রুততর ও সহজ করে তুলবে। 

এখনও কোনো কিছু খুঁজতে গেলে আপনাকে অনেক কথা লিখে সার্চ করতে হয়। কিন্তু ওয়েব ৩.০-তে আপনি একটা দুইটা জটিল বাক্য লিখে সার্চ দিলেই হবে, বাকি কাজ ওয়েব ৩.০ নিজেই করে নেবে। 

যেমন আপনি লিখতে পারেন, "আমি একটা কমেডি মুভি দেখতে চাই, তারপর একটা ভাল ম্যাক্সিক্যান রেস্টুরেন্টে খেতে চাই। আমার হাতে কী কী অপশন আছে?" 

ওয়েব ৩.০ ব্রাউজার আপনার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করবে, তারপর নিজে নিজেই সার্চ করে সম্ভাব্য সব উত্তর যোগার করবে। এবং ফলাফলগুলিকে সাজিয়ে আপনার সামনে হাজির করবে।

শুধু তাই না, ওয়েব ৩.০ আরও অনেক কিছু করতে পারবে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে ওয়েব ৩.০ একজন ব্যক্তিগত সহকারীর মতই কাজ করবে। আপনি যখন ওয়েব ৩.০ তে কিছু সার্চ করবেন, এটা সেই সার্চ থেকে শিখে রাখবে আপনি কোন কোন বিষয়ে আগ্রহী। 

এই ওয়েব আপনি যত ব্যবহার করবেন, ব্রাউজারটি ততই শিখতে থাকবে। তখন আর আপনাকে খুব বেশি নির্দিষ্ট করে প্রশ্ন করতে হবে না। আসলে তখন শুধু "দুপুরে খাওয়ার জন্য কোথায় যাব?"-এর মত সাধারণ প্রশ্ন করলেই হবে। উত্তর দেয়ার জন্য আপনার ব্রাউজার আপনি কী কী পছন্দ করেন আর কী কী পছন্দ করেন না সেই রেকর্ডগুলি দেখবে, আপনার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করবে এবং তারপরে একটা রেস্টুরেন্টের তালিকা সাজেস্ট করবে।

ভবিষ্যতে ওয়েব কোথায় যাচ্ছে তা ভালোভাবে বুঝতে, ওয়েব আগে কেমন ছিল, সেটা আমাদের বুঝতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ওয়েবের ইতিহাস ও বিবর্তন।
.

# ওয়েব ৩.০ এর পথ চলা

ইন্টারনেট বিষয়ে যেসব বাজওয়ার্ড ও জারগন বা পরিভাষা সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে পরিচিত শব্দটি সম্ভবত 'ওয়েব ২.০'। শব্দটা অনেকে জানলেও খুব কম মানুষই জানেন এটা দিয়ে আসলে কী বোঝায়। 

কেউ কেউ মনে করেন এটা নেহাতই একটা মার্কেটিং কৌশল। যার উদ্দেশ্য ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট (যারা ঝুঁকিপূর্ণ উদ্যোগে অর্থ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী থাকেন) প্রতিষ্ঠানগুলিকে ওয়েবসাইটে কোটি কোটি অর্থ বিনিয়োগ করতে আকৃষ্ট করা।

তবে এটা ঠিক, ও'রেইলি মিডিয়ার ডেল ডাউটি যখন এই শব্দটি তৈরি করেন তখন এর কোনো সঠিক সংজ্ঞা ছিল না। এমনকি ওয়েব ১.০ বলে আদৌ কিছু আছে কিনা, সে বিষয়েও কোনো নির্দিষ্ট মতামত ছিল না।

আবার অন্যেরা জোর দিয়ে বলছেন যে, ওয়েব ২.০ বাস্তবে আছে। তাহলে বিষয়টা ঠিক কী দাঁড়াল?
.

সংক্ষেপে ওয়েব ২.০ এর বৈশিষ্ট্য:

১. ভিজিটরদের কাছে ওয়েব পেইজ পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকে: অ্যামাজন তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটরদের পণ্যের রিভিউ পোস্ট করতে দেয়। অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে অনলাইন ফর্ম ব্যবহার করা যায়। এবং ওয়েব পেইজগুলিতে কোনো ভিজিটর চাইলে যেকোনো তথ্য যোগ করতে পারেন। পরে অন্য ভিজিটররা সেই তথ্য পড়তে পারেন।

২. অন্য ব্যবহারকারীদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ওয়েব পেইজ ব্যবহার করা: ফেসবুক ও মাইস্পেস এর মত সামাজিক মাধ্যমগুলি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে কারণ, এগুলির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা একে অপরকে খুঁজে পেতে এবং পরস্পরের সাথে সহজে যোগাযোগ রাখতে পারেন।

৩. কনটেন্ট শেয়ারিংয়ের জন্য দ্রুত ও কার্যকরী উপায়: এর যথার্থ উদাহরণ হচ্ছে ইউটিউব। একজন ব্যবহারকারী ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং তা অন্যদের দেখার জন্য সাইটে আপলোড করতে পারেন মাত্র এক ঘণ্টারও কম সময়ে।

৪. তথ্য পাওয়ার নতুন নতুন পদ্ধতি: ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা কোন ওয়েব পেইজের রিয়েলি সিম্পল সিন্ডিকেশন বা আরএসএস ফিডগুলি সাবস্ক্রাইব করতে পারেন। এর ফলে যতক্ষণ ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে, ততক্ষণ ব্যবহারকারী নিয়মিতভাবে এই সাইটের আপডেট পেতে থাকবেন।

৫. কম্পিউটার ছাড়াও ইন্টারনেট অ্যাক্সেস: অনেকেই মোবাইল ফোন ও ভিডিও গেইম ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন অচিরেই গ্রাহকেরা টেলিভিশন সেট ও বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
.

ওয়েব ১.০ কে লাইব্রেরি হিসাবে চিন্তা করুন। তথ্যের উৎস হিসেবে এটা ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু আপনি কোনোভাবেই এখানে তথ্য যোগ করতে বা পরিবর্তন করতে পারবেন না। 

অপরদিকে, ওয়েব ২.০ হল অনেকটা বন্ধু ও পরিচিতদের একটা বড় গ্রুপের মত। এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য যেমন পাবেন, তেমনি কথাও বলতে পারবেন,অন্যদের সাথে অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করতে পারবেন।

ওয়েব ২.০ নিয়ে এখনও অনেক সমালোচনা আছে। তবে ইতিমধ্যেই অনেকে ওয়েবের ভবিষৎ কেমন হবে তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। 

ঠিক তাই। কেমন হবে ওয়েব ৩.০? আমরা আজ যে ওয়েব ব্যবহার করছি তার থেকে কতটা আলাদা হবে সেই ওয়েব? বৈপ্লবিক কোনো পরিবর্তন আসবে, নাকি কোনো সূক্ষ্ম পরির্বতন ঘটবে যেখানে আমরা পার্থক্যগুলি ধরতে পারব না?

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের পরবর্তী প্রজন্ম কেমন হবে বলে মনে করেন ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞরা?
.

# ওয়েব ৩.০

ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ওয়েব ৩.০ হবে এমন, যেন এটা আপনার ব্যক্তিগত সহাকারী, আপনার সম্পর্কে প্রায় সবকিছু জানে। এবং ইন্টারনেটের সকল তথ্য অ্যাক্সেস করে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। অনেকে ওয়েব ৩.০-কে বিশাল কোনো ডেটাবেজের সাথে তুলনা করেন। 

ওয়েব ২.০-তে মূলত ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষের সাথে মানুষের সংযোগ স্থাপন হয়েছে। আর ওয়েব ৩.০ ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষের সাথে তথ্যের সংযোগ স্থাপন হবে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ওয়েব ৩.০ বর্তমান ওয়েবের জায়গা দখল করে নেবে, আবার অনেকে মনে করেন এটা পৃথক কোনো নেটওয়ার্ক হিসাবে থাকবে।

একটা উদাহরণের সাহায্য নিলে এই ধারণাটি বুঝতে সহজ হবে। ধরা যাক আপনি কোথাও ছুটি কাটাতে যাওয়ার কথা ভাবছেন। গরম আবাহাওয়া ও উষ্ণ পানি আছে এমন কোথাও যেতে চান। ভ্রমণের জন্য বাজেট ঠিক করেছেন ২ লক্ষ টাকা। আপনি চান, থাকার জন্য একটা ভাল জায়গা, তা যেন আবার আপনার বাজেটের বাইরে না চলে যায়। অল্প খরচে একটা মানসম্মত ফ্লাইটও আপনি চান।

বর্তমানে ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভাল অপশনগুলি খুঁজে বের করতে আপনাকে অনেক গবেষণা করতে হবে। প্রথমে সম্ভাব্য গন্তব্য সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে, তারপর এর মধ্য থেকে কোনটা ভাল হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। তারপর আবার এর জন্য দুই বা তিনটা ভ্রমণ সাইট ভিজিট করতে হবে আপনার, একটার সাথে অন্যটার ফ্লাইট ও হোটেল রুমের ভাড়ার তুলনা করতে হবে। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের অনেক ফলাফলের পেছনে সময় ব্যয় করতে হবে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিতে কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে।

কিছু ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়েব ৩.০ এর সাহায্যে আপনি ইন্টারনেটকে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থেকে সব কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। একটা সার্চ সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন এবং সার্চের ক্ষেত্র বা পরিসীমা আরো সীমিত করে দিতে পারবেন। এরপরে ব্রাউজারটি তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করবে। এমনভাবে করবে যার ফলে ফলাফলগুলি তুলনা করা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। ওয়েব ৩.০ এতে সক্ষম হবে কারণ এর তথ্য বুঝতে পারার ক্ষমতা থাকবে।

বর্তমানে আপনি যে সকল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করছেন, সেগুলি আসলে আপনার সার্চের বিষয়টা বুঝতে পারে না। সার্চ করার জন্য আপনি যেসব শব্দ টাইপ করছেন, এই সার্চ ইঞ্জিনগুলি কেবল সেই কিওয়ার্ড ধরে ওয়েব পেইজ খোঁজে। ওয়েব পেইজটি চলে এলেও আপনার সার্চের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক কিনা তা এসব সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে না। এগুলি শুধু দেখে আপনার সার্চ করা কিওয়ার্ডটি ওয়েব পেইজে উপস্থিত আছে কিনা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি "স্যাটার্ন" লিখে সার্চ করেন, একটা গ্রহ সম্পর্কে এবং একটা গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি সম্পর্কে ফলাফল পাবেন। অপরদিকে ওয়েব ৩.০ এর কোনো সার্চ ইঞ্জিন আপনার সার্চের কিওয়ার্ডগুলি খুজবে, পাশাপাশি সার্চের “কনটেক্সট”ও বুঝতে পারবে।

ফলে এটা আপনাকে অনেক প্রাসঙ্গিক ফলাফল দেখাবে এবং সার্চ টার্মের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য ফলাফলও দেখাবে। 

ছুটিতে ভ্রমণে যাওয়ার উদাহরণের ক্ষেত্রে, আপনি যদি "২ লাখ টাকার নিচে গ্রীষ্মকালীন ছুটির গন্তব্য" লিখে সার্চ করেন, তাহলে ওয়েব ৩.০ এর ব্রাউজার সার্চ ফলাফলের সাথে সম্পর্কিত মজাদার অ্যাকটিভিটি বা দুর্দান্ত রেস্টুরেন্টের তালিকাও আপনাকে দেখাতে পারবে। যে কোনো প্রশ্নের উত্তরের জন্য এটা পুরো ইন্টারনেটকে, তথ্যের বিশাল ডেটাবেজ হিসাবে বিবেচনা করবে।
.

# ওয়েব ৩.০ কীভাবে এটা করতে পারবে?

ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ঠিক কোন দিকে গড়াবে, তা কেউ’ই জানে না। তবে ওয়েব ৩.০ এর ক্ষেত্রে, বেশিরভাগ ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞই এর সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে একমত। তারা বিশ্বাস করেন, ওয়েব ৩.০ ব্যবহারকারীদের আরও সমৃদ্ধ ও আরো প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা দেবে। 

অনেকে এমনও মনে করেন, ওয়েব ৩.০-তে, প্রত্যেক ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং হিস্ট্রির ওপর ভিত্তি করে একটা নিজস্ব ইন্টারনেট প্রোফাইল থাকবে। এই প্রোফাইল ব্যবহার করে ওয়েব ৩.০ সবার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতাকে বিশেষ করে তুলবে। অর্থাৎ যদি দু'জন ভিন্ন ব্যক্তি একই সার্ভিস ব্যবহার করে একই কিওয়ার্ড দিয়ে ইন্টারনেট সার্চ করেন, তাহলে তারা পৃথক পৃথক প্রোফাইলের কারণে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল পাবেন।

এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার দরকার সেগুলি এখনও পরিপূর্ণভাবে তৈরি হয়নি। কিছু কোম্পানি যদিও ব্যবহারকারীদের ইনপুটের ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত কন্টেন্ট সরবরাহ করছে, এগুলি এখনও মূলত ট্রায়াল-এবং-এরর পদ্ধতিতে কাজ করে। ফলে এসব ওয়েব ৩.০ এর মত অতটা কার্যকর না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এসব সার্ভিস মূলত সীমিত পরিসরে, যেমন টেলিভিশন শো ও গান ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজ করে। অপরদিকে ওয়েব ৩.০ ইন্টারনেটের সমস্ত তথ্য নিয়ে কাজ করবে।

কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন ওয়েব ৩.০ এর ভিত্তি হবে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই)৷ এপিআই হল এমন ইন্টারফেস যা ডেভেলপারদের নির্দিষ্ট কিছু রিসোর্স ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে দেয়। ওয়েব ২.০ এর অনেক সাইটে এপিআই রয়েছে। এর ফলে প্রোগ্রামাররা সাইটগুলির নিজস্ব ডেটা ব্যবহার করতে পারে। উদাহরণস্বরুপ, ফেসবুকের এপিআই ব্যবহার করে ডেভেলপাররা বিভিন্ন গেম, কুইজ ইত্যাদি তৈরি করতে পারে।

ওয়েব ২.০ এর একটা ট্রেন্ড ওয়েব ৩.০ এর উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে। সেই ট্রেন্ডটি হলো ম্যাশআপ। ম্যাশআপ বলতে দুই বা ততধিক অ্যাপ্লিকেশনকে একটা অ্যাপ্লিকেশনে একত্রীকরণ বোঝায়। 

উদাহরণস্বরুপ, একজন ডেভেলপার এমন প্রোগ্রাম বানাতে পারেন যেখানে ব্যবহারকারীরা গুগল ম্যাপে রেস্টুরেন্ট রিভিউ করতে পারবেন। এই নতুন ম্যাশআপ অ্যাপ্লিকেশন কেবল রেস্টুরেন্টের রিভিউ’ই দেখাবে না, পাশাপাশি গুগল ম্যাপে ব্যবহারকারীদের রেস্টুরেন্টের অবস্থানও দেখাবে। কিছু ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ওয়েব ৩.০-এ ম্যাশআপ তৈরি করা বেশ সহজ হবে, ফলে যে কেউ এটা করতে পারবে।

অন্যান্যরা মনে করেন ওয়েব ৩.০-কে একেবারে নতুন ভাবে শুরু করতে হবে। ওয়েব ২.০ এর মত বেসিক কোডিং ভাষা হিসাবে এটা এইচটিওএমএল ব্যবহার করবে না। পরিবর্তে এটা নতুন কোনো (এখনও নামহীন) ভাষার ওপর নির্ভর করবে। 

বর্তমান ওয়েব পরিবর্তন করার চেষ্টা না করে নতুন করে শুরু করাই বরং সহজ হতে পারে। যাইহোক, ওয়েব ৩.০ এর এই সংস্করণটি এতই থিওরিটিক্যাল যে এটা ঠিক কীভাবে কাজ করবে তা বলা এখনও অসম্ভব।

ওয়েব ৩.০ যতটা না বাস্তব তার থেকে বেশি তাত্ত্বিক। তারপরেও ওয়েবের দূরবর্তী ভবিষ্যৎ কী হবে তা অনুমান করা থেকে মানুষ বিরত থাকেনি।
.

# ওয়েব ৩.০ ছাড়িয়ে

ওয়েবের পরবর্তী প্রজন্মের পরে কী আসবে? অনেক রকম তত্ত্বই আছে। কিছু রক্ষণশীল ভবিষ্যদ্বাণী, আর কিছু শুনলে মনে হবে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্রের মত। এখানে তার কয়েকটি থাকছে:

১. প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা নোভা স্পিভাকের মতে, ১০ বছর পরপর ওয়েবের বড় ধরনের উন্নতি হয়। ওয়েব উদ্ভাবনের প্রথম দশকে, বেশিরভাগ উন্নয়ন ওয়েবের অবকাঠামোর দিকে ঘটেছে। তখনকার প্রোগ্রামাররা বিভিন্ন ধরনের প্রটোকল ও কোডিং ভাষা তৈরি করেছিলেন। 

দ্বিতীয় দশকে, প্রোগ্রামারদের মনোযোগ ওয়েবের অবকাঠামো থেকে সরে যায় এবং ওয়েব ২.০ যুগ শুরু হয়। এখন মানুষ অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ওয়েব পেইজ ব্যবহার করতে পারে। তারা এখন ম্যাশআপ তৈরি করে, এবং ওয়েব অভিজ্ঞতা আরও ইন্টারেকটিভ করার নানা উপায় নিয়ে পরীক্ষা করে। আমরা এখন ওয়েব ২.০-এর শেষ দিকে আছি। 

পরবর্তী ধাপ হল ওয়েব ৩.০। এক্ষেত্রে লক্ষ্য বা ফোকাস আবারও ফিরে যাবে পেছনের দিকে। প্রোগ্রামাররা ওয়েব ৩.০-এর ব্যবহার উপযোগী করে ইন্টারনেটের অবকাঠামোকে পরিশীলিত করবে। এই পর্যায়টি আবার যখন শেষ হবে, আমরা ওয়েব ৪.০ যুগে প্রবেশ করব। ফোকাস আবারও ফিরে আসবে ওয়েবের ভেতরে। ঠিক যেভাবে ওয়েব ২.০-কে ভিত্তি করে ওয়েব ৩.০ গড়ে উঠবে, সেভাবেই ওয়েব ৩.০-কে ভিত্তি করে গড়ে উঠবে ওয়েব ৪.০। আমরা দেখা পাব হাজার হাজার নতুন প্রোগ্রামের।

২. ওয়েব একটা ত্রি-মাত্রিক পরিবেশে রূপান্তরিত হবে। ওয়েব ৩.০ এর পরিবর্তে, আমরা ওয়েব থ্রিডি দেখতে পাব। মাল্টিপ্লেয়ারভিত্তিক অনলাইন রোলপ্লেয়িং গেমগুলির (MMORPGs) স্থায়ী অনলাইন জগতের সাথে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান একত্রিত হবে। এর ফলে ওয়েব এমন একটা ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপে পরিণত হতে পারে যা হবে অত্যন্ত গভীর। আপনি ওয়েবটি হয়ত ফার্স্ট-পারসন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহার করবেন অথবা নিজের একটা ডিজিটাল সত্তা অর্থাৎ অ্যাভাটারের মাধ্যমে ব্যবহার করবেন।

৩. ওয়েব হয়ত ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং বা ছড়িয়ে দেওয়া কম্পিউটিংয়ের উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে। এর ফলে সত্যিকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করা সম্ভব হবে। ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং হল এমন পদ্ধতি, যেখানে কয়েকটি কম্পিউটার একসাথে কোনো বৃহৎ কাজ প্রক্রিয়া করে। প্রতিটি কম্পিউটার সামগ্রিক কাজের একটা ছোট্ট অংশ পরিচালনা করে। 

কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, ওয়েব একসময় চিন্তা করতে পারবে। হাজার হাজার কম্পিউটার নিয়ে ওয়েব একটা বিশাল মস্তিষ্কে পরিণত হবে। অসীম ডেটা বিশ্লেষণ করবে এবং সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন ধারণাগুলি ব্যাখ্যা করতে পারবে।

৪. কম্পিউটার ও সেল ফোনের সীমানা ছাড়িয়ে ওয়েবের পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। ঘড়ি থেকে শুরু করে টেলিভিশন সেট, এমনকি পোশাক, আসলে সবকিছুই ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হবে। ব্যবহারকারীদের ওয়েবের সাথে একটা স্থায়ী সংযোগ থাকবে। এর বিপরীতে ওয়েবও ব্যবহারকারীদের সাথে সবসময় যুক্ত থাকবে।

ওয়েবের এই ভবিষ্যৎ সংস্করণগুলির মধ্যে কোনটা যে বাস্তবে রূপ লাভ করবে তা বলার মত সময় এখনও আসেনি। এমনকি এও সম্ভব যে ওয়েবের প্রকৃত ভবিষ্যৎ সবচেয়ে বেমি যে প্রত্যাশা  তার থেকেও অনেক বেশি মাত্রায় বিলাসবহুল হবে। 

আমরা কেবল এখন আশা করতে পারি, ওয়েবের সেই ভবিষ্যৎ যখন আসবে, সবাই যেন এটাকে নির্দিষ্ট কোনো নামে ডাকতে একমত হই।

#ইন্টারনেট #ভবিষ্যৎ #ওয়েবথ্রি
Collected from internet

Comments

Popular posts from this blog

Auto Paragraph

Auto paragraph Facebook/Computer/Mobile phone/Internet/Television  ( এই গুলার যে কোন একটা ..........  দেওয়া জায়গা গুলাতে বসাতে হবে ) ..............is one of the greatest invention of modern science. It has made our life easy and comfortable. We use it in our daily life. We cannot think of our day without.......... . We can communicate with anyone of anywhere of the world by using.......... . It has made the word smaller. We can share our feelings, liking and disliking’s with others using............. . Nowadays.........  has become a great medium of learning. People  can learn many things using........   sitting at home. It is a great source of entertainment also. We can watch videos music news sports etc through..........  .we need not to go to stadium. Inspire of having so many good sides it has some bad sides also. It is harmful for our body. Sometimes students become addicted to it. At last it can be said that..........  is a ...

Books poem analysis with bangla

Books poem in bangla and with analysis Verse-wise Bangla Translation: What worlds of wonder are our books! As one opens them and looks, New ideas and people rise In our fancies and our eyes. আমাদের বইগুলো কী আশ্চর্য এক জগৎ! যখনই কেউ তা খুলে দেখে, নতুন ভাবনা আর নতুন মানুষ জেগে ওঠে কল্পনায় ও চোখের সামনে। The room we sit in melts away, And we find ourselves at play With some one who, before the end, May become our chosen friend. আমরা যে ঘরে বসে আছি, তা যেন মিলিয়ে যায়, আর আমরা আবিষ্কার করি নিজেদের খেলায় মত্ত কাউকে সঙ্গে নিয়ে, যে হয়তো শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠবে। Or we sail along the page To some other land or age. Here's our body in the chair, But our mind is over there. অথবা আমরা পৃষ্ঠার ওপর দিয়ে ভাসতে থাকি অন্য কোনো দেশ বা কালের দিকে। আমাদের শরীরটা রয়েছে চেয়ারে, কিন্তু মন চলে গেছে দূরে অন্য কোথাও। Each book is a magic box Which with a touch a child unlocks. In between their outside covers Books hold all things for their lovers. প্রতিটি বই একেকটি জাদুর বাক্স, যা শিশুরা এক ...

paragraph on PREMATURE MARRIAGE

P remature marriage is a very common feature in a poor country like Bangladesh. It means the marriage of the boys and girls before attaining their physical and mental maturity. In our country girls particularly poor rural girls are the victims of premature marriage. Unfortunately, the birth of girls is considered unwelcome in our country. They are neglected from their birth. They have to live in a male dominated society. As a result, they are the victims of gender discrimination. They have no 'say' in the family decision. Many parents try to find a husband for their daughters before they attain the age of maturity. We find that illiteracy, poverty, selfish attitude, unconsciousness, religious misconception , dowry system, etc. are some of the causes of premature marriage. The effects of premature marriage are very harmful for health and mind of a female child. The girls cannot adjust with the new environment of their in-law's house. They cannot serve their husbands' fam...